শহিদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে ভূমি উপদেষ্টা, করলেন কবর জিয়ারত

বেনাপোল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ২১:১৬
-673b5a3051bbd.jpg)
ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ। ছবি: সংগৃহীত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত শহিদ আব্দুল্লাহর কবর জিয়ারত করেন ও তার রুহের মাগফিরাত কামনা করেন অন্তর্বর্তী সরকারের বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রনালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ। এ সময় আব্দুল্লাহর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন তিনি।
আজ সোমবার (১৮ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় বেনাপোল পোর্ট থানার বড় আঁচড়া গ্রামে আব্দুল্লাহর বাড়িতে পৌঁছান উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন যশোরের জেলা প্রশাসক যশোর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম, জেলা পুলিশ সুপার জিয়াউদ্দিন আহমেদ, বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার মো. কামরুজ্জামান, শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজিব হাসান, শার্শা উপজেলা এসিল্যান্ড (ভূমি) নুসরাত জাহান, যুবদলের কেন্দ্রীয় সাবেক সহ সভাপতি আলহাজ নুরুজ্জামান লিটন, বেনাপোল পৌর বিএনপির সাধারন সম্পাদক আবু তাহের ভরত, জামায়াতে কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা আজিজুর রহমানসহ যশোরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ প্রমুখ।
এ সময় উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ সাংবাদিকদের বলেন, আব্দুল্লাহর আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বেগবান হয়েছে। তার পরিবারের জন্য যা প্রয়োজন সরকার তা করবে।
তিনি আরও বলেন, শুধু ৫ আগস্ট না গত ১৫ বছরে আওয়ামীলীগ যে হত্যা, গুম, অর্থ পাচার করেছে প্রতিটির বিচার করা হবে। শহিদ আব্দুল্লাহর পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করার বিষয়টি চলমান রয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ আওয়ামী লীগের মন্ত্রী এমপিসহ বেশ ক’জনকে অপরাধ ট্রাইবুনালে হাজির করা হয়েছে।
উপদেষ্টা সেখানে পৌঁছানোর পর আব্দুল্লাহর মা মাবিয়া খাতুন, বাবা আব্দুল জব্বার কান্নায় ভেঙে পড়েন। তারা সন্তান হত্যা বিচার চান।
মাবিয়া খাতুন বলেন, আমার ছেলেকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করেছে পুলিশ। যারা গুলি করেছে ও নির্দেশ দিয়েছে দ্রুত তাদের বিচার করতে হবে। তবেই আমার ছেলের আত্মা শান্তি পাবে।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ পুলিশের গুলিতে আহত হন।
জানা যায়, ওইদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানীর তাঁতীবাজার মোড়ে বংশাল থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হন আবদুল্লাহ। তার কপালের ঠিক মাঝ বরাবর গুলি লাগে। এমন অবস্থায় প্রায় দুই থেকে তিন ঘণ্টা তিনি রাস্তায় পড়ে থাকেন।
প্রথমে তাকে মিটফোর্ড এবং পরে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রপচার করে তার মাথা থেকে গুলি বের করা হয়। তবে রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকলেও তাকে হাসপাতাল থেকে ১০ আগস্ট জোরপূর্বক ছাড়পত্র দেওয়া হয়।
এরপর তাকে বেনাপোলে নিয়ে আসেন স্বজনরা। বাড়িতে তার অবস্থার অবনতি হতে থাকলে তাকে ১১ আগস্ট রাতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার আরও অবনতি হওয়ায় ডাক্তাররা দ্রুত আবারও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
গত ১২ আগস্ট সকাল ৭টায় তাকে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা মাথার ভেতরে ইনফেকশন দেখতে পান যা তরল প্লাজমার মতো গলে গলে পড়তে থাকে। আবারও তার অপারেশন করা হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় গত ২২ আগস্ট তাকে সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮ দিকে মারা যান।