শরীয়তপুরে ৫ মাসে নিহত ১৪
মোটরসাইকেলের ভয়ংকর নেশা, বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল

শরীয়তপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৮:৩৭

অপ্রাপ্তবয়স্কদের হাতে মোটরসাইকেল। ছবি: শরীয়তপুর প্রতিনিধি
শরীয়তপুরে বিভিন্ন সড়ক ও মহাসড়কে মোটরসাইকেল নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ কিশোর ও তরুণরা। মোটরসাইকেলের ভয়ংকর নেশায় জড়িয়ে পড়ছে অপ্রাপ্তবয়স্করা। এতে অভিভাবকরা পড়ছে বিপাকে। চাহিদা মোতাবেক মোটরবাইক না কিনে দিলে আত্মহত্যার মতো ঘটনা ঘটছে।
অনেক অভিভাবক বাধ্য হয়ে অপ্রাপ্তদের মোটরবাইক কিনে দিচ্ছেন। ফলে বেড়েই চলছে দুর্ঘটনা। সড়কে ঝরছে তাজা প্রাণ। ট্রাফিক আইন না মানা তরুণ বাইকারদের বেপরোয়া গতি, হেলমেটবিহীন বাইক চালানোসহ নানা কারণেই ঘটছে দুর্ঘটনা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ মাসে ২০টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৪জন নিহত হয়েছে। যাদের বয়স ১৬ থেকে ১৮ বছর। অপ্রাপ্তবয়স্করা মোটরসাইকেল ড্রাইভিংয়ের সময় ব্যবহার করে না হেলমেট, নেই তাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স, সড়কের অনুমোদনসহ কোন কাগজপত্র। ভাঙাচোরা সড়ক ও মহাসড়কে দ্রুতগতিতে মোটরসাইকেল চালানোর কারণেই ঘটছে এ দুর্ঘটনা-এমনটি জানিয়েছেন অভিজ্ঞরা।
জানা গেছে, ৩ নভেম্বর রাত সাড়ে ৯টায় পদ্মা সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে জাজিরার নাওডোবায় দু’টি মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়। এরা প্রত্যেকেই শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা ইউনিয়নের বাসিন্দা। নিহতরা হলেন, মোসলেম ঢালি কান্দি এলাকার দাদন ঢালীর ছেলে আরমান ঢালী (১৬), একই এলাকার আলিম মাদবরের ছেলে খিদির মাদবর (১৮), মোমিন আলি ফরাজি কান্দি এলাকার রুবেল ফরাজির ছেলে নাবিল ফরাজি (১৭) ও এস্কেন্দার আলী মাদবরের ছেলে সায়েম (১৮)।
নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন শরীয়তপুরের সভাপতি অ্যাডভোকেট মুরাদ হোসেন মুন্সী বলেন, অপ্রাপ্তবয়স্কদের হাতে বাইকের নিয়ন্ত্রণ চলে যাওয়ায় দুর্ঘটনার হার দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ওই বয়সের বাইকারদের নেই ন্যূনতম সড়কের শৃঙ্খলার ধারণা। এরা অধিকাংশ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী অথবা তরুণ বয়সের।
এ বিষয়ে শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, আইনগতভাবে অপ্রাপ্তবয়স্কদের মোটরবাইক চালানোর কোন সুযোগ নেই। এই বিষয়গুলো শিক্ষক-অভিভাবকসহ সকলের জানা সত্ত্বেও কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী ও তরুণরা সড়কের নিয়ম শৃঙ্খলা না জানার কারণে বেপরোয়াভাবে মোটরবাইক চালায় বলেই দুর্ঘটনা ঘটছে। দুর্ঘটনার হার কমিয়ে আনতে ট্রাফিক আইন মেনে চলার পাশাপাশি অভিভাবকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন তিনি।