গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় মসজিদের কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে শাহিদুল প্রধান নামে একজন নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন আরো সাতজন। তাদের মধ্যে চারজনকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। 

স্বজনদের অভিযোগ, মজিদুল ইসলাম তার হাতে থাকা লাঠি ও অস্ত্র দিয়ে আঘাত করায় শাহিদুলের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। 

গতকাল শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) জুম্মার নামাজের পর গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ি ইউনিয়নের মালাধর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শাহিদুল প্রধান (৪৫) ফুলবাড়ি ইউনিয়নের মালাধর গ্রামের হাসিম প্রধানের ছেলে। অভিযুক্ত মজিদুল ইসলাম (৫০) একই গ্রামের কামাল হোসেনের ছেলে।

আটককৃতরা হলেন, আব্দুর গফুর (৩৮), শাকিল আহমেদ (২৭) ও শাফিউল সোহাগ (৩০)। তাদের সকলের বাড়ি মালাধর গ্রামে।  

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সাতগ্রাম নিয়ে মালাধর জামে মসজিদে নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। সম্প্রতি মসজিদের কমিটি গঠন নিয়ে উত্তরপাড়া ও দক্ষিণপাড়ার মুসল্লিদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এরই জেরে শুক্রবার নামাজ পর কমিটি গঠন নিয়ে দুই পক্ষের মুসল্লিরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে মজিদুল ইসলামসহ তার সঙ্গে থাকা লোকজন লাঠি নিয়ে শাহিদুল প্রধানের ওপর হামলা চালান। পরে ছুরি দিয়ে মাথায় আঘাত করলে গুরুত্বর আহত হন শাহিদুল। স্থানীয়রা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।  

মুসল্লিদের অভিযোগ, এর আগে পুলিশের কর্মকর্তা মজিদুল ইসলাম মসজিদের সভাপতি ছিলেন। তিনি আবারও তার পছন্দের লোক দিয়ে পকেট কমিটি গঠন করেন। সেই কমিটির জেরে পরিকল্পিতভাবে মজিদুল তার লোকজন নিয়ে এই হামলার ঘটনা ঘটায়। 

নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, শাহিদুল প্রধান একজন দিনমজুর। সাধারণ মুসল্লির মতো মসজিদে নামাজ আদায় করেন তিনি। কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব কিংবা কোন পক্ষেই তিনি ছিলেন না। কিন্তু তার ওপরে হামলা করে অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হলো। হত্যাকাণ্ডে পুলিশ সদস্য মজিদুলসহ তার সঙ্গে থাকা জড়িতদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবি জানান স্বজনরা। 

গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বুলবুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।