কক্সবাজার সৈকতে অবৈধ স্থাপনা সরাতে উচ্ছেদ অভিযান

কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯:৫১

সৈকতের ঝিনুক মার্কেটে শুরু হয়েছে উচ্ছেদ অভিযান। ছবি: কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজার সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টের বালিয়াড়িতে বসানো ঝিনুক মার্কেটে শুরু হয়েছে উচ্ছেদ অভিযান। এছাড়া সৈকত এলাকায় নির্মিত অবৈধ দোকান ও অস্থায়ী স্থাপনা একদিনের মধ্যে সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন।
আজ শনিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে এমন নির্দেশ দেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ে সৈকতে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করতে গিয়ে দোকান মালিক ও হকারদের নিজ দায়িত্বে মালামাল সরিয়ে নিতে মাইকিং করেন ইউএনও।
অভিযানের বিষয়ে নিলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী বলেন, সৈকতের বালিয়াড়ি থেকে সব ধরনের স্থাপনা সরিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। উচ্চ আদারতের আদেশ অনুযায়ী সৈকতের দখল ছেড়ে দিতে সবাইকে আহ্বান জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
সৈকতের লাবণী থেকে কলাতলী পর্যন্ত অন্তত ৫০০ অবৈধ স্থাপনা রয়েছে জানিয়ে ইউএনও বলেন, ব্যবসায়ীরা উচ্ছেদ অভিযানে সহায়তা করছেন। তারা এরই মধ্যে অস্থায়ী স্থাপনা সরিয়ে নিতে কাজ করছেন।
এদিকে, কোনো ধরনের পুনর্বাসন ছাড়া এবং আগাম নোটিশ না দিয়ে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ঝিনুক ব্যবসায়ীসহ সাগরপাড়ের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
বৈষম্যের শিকার হয়েছেন মন্তব্য করে তারা বলেন, জোয়ার-ভাটায় সাগরের ঢেউয়ের যাতায়াত স্থান থেকে ৩০০ মিটার দূরত্ব পর্যন্ত কোনো স্থাপনা না রাখার নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু ওই দূরত্বে বিভিন্ন সরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের স্থাপনা থাকলেও তা উচ্ছেদে প্রশাসনের কোনো তৎপরতা নেই।
স্থানীয়রা জানান, ৫ অগাস্ট সরকার পরিবর্তনের পর কক্সবাজার শহরের সুগন্ধা পয়েন্টের বেলাভূমিতে গড়ে ওঠে আরও ২০টি দোকান। এই পয়েন্টের সড়ক, ফুটপাত ও বালিয়াড়িতে প্রায় ২০০ ভ্রাম্যমাণ হকার বসে। এর দক্ষিণ পাশে কলাতলী পয়েন্টের ‘সি ক্রাউন হোটেলের’ সামনে রয়েছে পাঁচটি দোকান। মেরিন ড্রাইভের ইনানী সৈকতের বেলাভূমিতে অন্তত ৩০টি রেস্তোরাঁসহ বিভিন্ন দোকানপাট নির্মাণ করা হয়েছে।
এ ছাড়া দরিয়ানগর, হিমছড়ি, সালসা বিচ, পাটুয়ারটেকসহ বিভিন্ন এলাকায় সরকারি জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, সরকার কক্সবাজারের সৈকত এলাকায় প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে ১৯৯৯ সালের ১৯ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে। এই গেজেট অনুযায়ী সৈকতের বেলাভূমিতে স্থাপনা নিষিদ্ধ।
কিন্তু আইন না মেনে দীর্ঘদিন ধরে স্থাপনা নির্মাণ অব্যাহত থাকায় ২০১৭ সালে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে সৈকতের জোয়ার-ভাটার মধ্যবর্তী লাইন থেকে প্রথম ৩০০ মিটার ‘নো ডেভেলপমেন্ট জোন’ উল্লেখ করে এ এলাকায় কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না বলে নির্দেশনা দেয় উচ্চ আদালত।
সম্প্রতি হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নের জন্য বেলার পক্ষে নোটিশ দেয়া হলে একদিনের মধ্যে স্বেচ্ছায় অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার নিদের্শ দেয় জেলা প্রশাসন।