Logo
×

Follow Us

জেলার খবর

খাদ্য সংকট এড়াতে সেন্টমার্টিন গেল ৭ পণ্যবাহী ট্রলার

Icon

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:২৭

খাদ্য সংকট এড়াতে সেন্টমার্টিন গেল ৭ পণ্যবাহী ট্রলার

সেন্টমার্টিনে দ্বীপে পণ্যবাহী ট্রলার চলাচলে অনুমতি৷ ছবি: কক্সবাজার প্রতিনিধি

সেন্টমার্টিনে নৌচলাচল নিষেধাজ্ঞার দুদিনের মাথায় খাদ্য সংকট দেখা দেয়। পর্যটক ও স্থানীয়দের কথা বিবেচনায় দ্বীপে পণ্যবাহী ট্রলার চলাচলে অনুমতি দেওয়া হয়৷

গতকাল বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে বিশেষ ব্যবস্থায় পণ্যবাহী সাত ট্রলার সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। মিয়ানমার সীমান্তে উদ্ভূত পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় নাফ নদীতে নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। জনসাধারণ ও পর্যটকদের বিষয় মাথায় নিয়ে দ্বীপে পণ্য সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। 

বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহেসান উদ্দিন।

এর আগে মঙ্গলবার রাতে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে ট্রলার মালিক ও চালকদের নাফ নদীতে সকল ধরণের নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞার কথা জানানো হয়। বুধবার সকাল থেকে উপজেলা প্রশাসন নৌযান চলাচলে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এর প্রেক্ষিতে বুধবার নাফ নদীর সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় উপজেলা প্রশাসন মাইকিং করে নিষেধাজ্ঞা জারির বিষয়টির ব্যাপারে সতর্কতা জারি করে।

তবে বঙ্গোপসাগর হয়ে কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল অব্যাহত থাকবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

এর আগে গত ৮ ডিসেম্বর মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্যের মংডু শহর শতভাগ নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর আরাকান আর্মি নাফ নদীর মিয়ানমারের অংশে অনির্দিষ্টকালের জন্য নৌ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। এর প্রেক্ষিতে যেকোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা।

ইউএনও শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রচারিত খবর অনুযায়ী টেকনাফসহ বাংলাদেশ লাগোয়া পুরো সীমান্ত এলাকার নিয়ন্ত্রণ এখন মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির হাতে। দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীর প্রচারিত বিবৃতিতে নাফ নদীর মিয়ানমার অংশ দিয়ে মাছ ধরার ট্রলারসহ যেকোনো ধরণের নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এতে নাফ নদীর জলসীমা শূন্যরেখার কাছাকাছি নৌযান চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

নাফ নদীর বঙ্গোপসাগরের মোহনার আগে বাংলাদেশ অংশ বেশ কয়েকটি ডুবোচর রয়েছে। এতে বড় ধরণের নৌযানগুলোকে নাফ নদীর কিছুটা দূরত্বে মিয়ানমার অভ্যন্তর দিয়ে চলাচল করতে হয়। সীমান্তে ঝুঁকি এড়াতে উপজেলা প্রশাসন পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নাফ নদীতে সবধরনের নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। 

ইউএনও বলেন, নাফ নদীতে নৌযান চলাচল বন্ধ থাকলে সেন্টমার্টিন দ্বীপে নিত্যপণ্য প্রয়োজনীয় মালামালের সংকট দেখা দিতে পারে। তাই সীমান্তে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দ্বীপে পণ্য সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ জেটি ঘাট থেকে পণ্যবাহী ৭টি ট্রলার কোস্টগার্ডের নিরাপত্তায় সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। এসব ট্রলারে অন্তত ৫০ জন যাত্রীও দ্বীপে গেছেন। 

শেখ এহেসান উদ্দিন বলেন, জোয়ারের সময় ছোট ও মাঝারি আকারের ট্রলারগুলোকে নাফ নদী দিয়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপে বাংলাদেশের জলসীমার অভ্যন্তর দিয়ে অনুমতি নিয়ে চলাচল করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এসব ট্রলার কোন অবস্থাতেই শূন্যরেখার কাছাকাছি অথবা মিয়ানমার জলসীমায় প্রবেশ করতে পারবে না। এছাড়া জোয়ারের সময় যাত্রীবাহী স্পিড বোটগুলো শাহপরীর দ্বীপের গোলারচর পয়েন্ট দিয়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপে যাতায়াত করতে পারবে।

সেন্টমার্টিন সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি রশিদ আহমদ বলেন, টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে ২৭টি সার্ভিস ট্রলার ও ৪৭টি স্পিড বোটের চলাচল রয়েছে। বুধবার সকালে উপজেলা প্রশাসন নিষেধাজ্ঞা জারির পর থেকে কোন ধরণের নৌযান চলাচল করেনি। তবে বৃহস্পতিবার বিকালে প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে কোস্টগার্ডের নিরাপত্তায় পণ্যবাহী ৭টি ট্রলার সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। এসব ট্রলারে কিছু সংখ্যক সাধারণ যাত্রীও ছিলেন।

এদিকে মিয়ানমারে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে টেকনাফ সীমান্তে নিরাপত্তাসহ টহল ও নজরদারি জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজিবির টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়ানের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কের দায়িত্বে থাকা উপ-অধিনায়ক মেজর সৈয়দ ইশতিয়াক মুর্শেদ।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫