Logo
×

Follow Us

জেলার খবর

মাইনী উপত্যকায় প্রিয়দর্শীর বিষমুক্ত সবজির প্রাচুর্য

Icon

সমির মল্লিক, খাগড়াছড়ি

প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪৪

মাইনী উপত্যকায় প্রিয়দর্শীর বিষমুক্ত সবজির প্রাচুর্য

প্রিয়দর্শীর বিষমুক্ত সবজি চাষ। ছবি: খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি

প্রায় ৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ মাইনী নদী। মাইনীর অববাহিকায় গড়ে উঠেছে পাহাড়ি জনপদ দীঘিনালা। খাগড়াছড়ি জেলা সদর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরের পাহাড়ি সবুজ জনপদ মাইনী উপত্যকা হিসেবে পরিচিত। মাইনীর  তীরজুড়ে এখন রবি ফসলের প্রাচুর্য। তবে এখানে সবার চেয়ে আলাদা প্রিয়দর্শী চাকমা। প্রায় দুই দশক ধরে কৃষি কাজের সাথে জড়িত প্রিয়দর্শী প্রচলিত কৃষির বৃত্ত ভেঙে বিষমুক্ত কৃষি খামার গড়ে তুলেছেন। মানুষের খাবারে পাতে বিষমুক্ত খাবার তুলে দিতেই তিনি এমন উদ্যোগ নিয়েছেন। কীটনাশকের পরিবর্তে ব্যবহার করছেন পরিবেশবান্ধব বালাইনাশক।

সরেজমিনে শীতের সকালে প্রিয়দর্শীর সবজির বাগানের গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার কামুক্যাছড়ায়  মাইনী নদীর তীরে প্রায় ১৬০ শতক জমিতে বাহারি ফসলের প্রাচুর্য। ফুলকপি, খিরা, মরিচ, বেগুন, লাউসহ বিভিন্ন সবজির চাষ করেছে তিনি। চলতি মৌসুমে চার দফার বন্যার পরও বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করে লাভবান হয়েছেন। পরিবেশবান্ধব বালাইনাশক ব্যবহার করে উৎপাদিত সবজির চাহিদাও বেশি। ইতোমধ্যে চলতি মৌসুমে প্রায় দেড় টন ফুলকপি বিক্রি করেছেন তিনি। যার বাজারমূল্য প্রায় ৯০ হাজার টাকা। এছাড়া মৌসুমের শুরুতে প্রায় ২ হাজার ৫০০ কেজি মুলা ও ২ হাজার কেজি খিরা বিক্রি করে আয় করেছেন কয়েক লাখ টাকা। প্রায় ২ লাখ ১০ টাকার কাঁচা মরিচ বিক্রির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন তিনি।

বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন প্রসঙ্গে প্রিয়দর্শী চাকমা বলেন, ২০০২ সাল থেকে আমি কৃষির সাথে জড়িত। মূলত অর্গানিক কৃষি নিয়ে কাজ করি। এখানে ফুলকপি, মুলা, মরিচ, খিরাসহ বিভিন্ন সবজির চাষ করেছি। তবে আমি কীটনাশক ব্যবহার করি নাই। মানুষের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ুর কথা ভেবে আমি অর্গানিক পদ্ধতিতে ব্যবহার করি। আমার ক্ষেতে উৎপাদিত সবজির কদরও বেশি। পাইকারি ব্যবসায়ীরা ক্ষেতে এসে ক্রয় করে নিয়ে যায়। মাইনী নদীর তীরবর্তী জমিতে প্রচুর পলি পরে এবং উৎপাদনও বেশ ভালো।

তিনি আরো বলেন, অসচেতন অনেক কৃষক মাত্রারিক্ত কীটনাশক ব্যবহার করেন। পুরো উপজেলায় বছরে অন্তত ২ থেকে ৩ কোটি টাকার বেশি মূল্যের কীটনাশক বেচাকেনা হয়। এসব বিষাক্ত কীটনাশক মানুষের শরীরেই যাচ্ছে। কীটনাশকে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বিবেচনা করেই আমি অর্গানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করছি। কৃষক সচেতন না হলে কীটনাশক মাত্রারিক্ত ব্যবহার বা অপব্যবহার কমবে না। এতে উৎপাদন ব্যয়ও বাড়বে। ধানের জন্য যে কীটনাশক তৈরি করা হয়েছে কৃষক সেটা সবজি চাষে ব্যবহার করছে। 

বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে দীঘিনালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, কৃষক প্রিয়দর্শীর কৃষি উদ্যোগ ব্যতিক্রম। তিনি মূলত অর্গানিক পদ্ধতিতে চাষ করেন। তার উৎপাদিত সবজির চাহিদাও বেশ। আমরা সবসময়ই বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে কৃষকদের উৎসাহিত করছি। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় আমরা তাকে (প্রিয়দর্শী) প্রণোদনা দিয়ে সহায়তা করছি।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫