মেরিনড্রাইভে দৌড়ালেন দেশি-বিদেশি ৩৯৮ রানার

কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১:৩৩
-67701a5ba969a.jpg)
মেরিনড্রাইভে দৌড়ালেন দেশি-বিদেশি ৩৯৮ রানার। ছবি- কক্সবাজার প্রতিনিধি
‘রান ফর হিরোস অব আওয়ার ভিক্টোরি’ প্রতিপাদ্যে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যৌথ উদ্যোগে আয়োজন করা হয় বিজয় দিবস হাফ ম্যারাথন।
সমুদ্র ও পাহাড়ের মাঝে অনিন্দ্য সৌন্দর্য্যে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের অবস্থান। আর সেই সড়কেই শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) ভোরের আলো ফুটতেই ছুটতে শুরু করেন দেশি-বিদেশি ৩৯৮ জন দৌড়বিদ। একদিকে সমুদ্রের ঢেউয়ের গর্জন, অন্যদিকে পাহাড়ী সবুজের হাতছানির প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য্যের পরিবেশে বিরামহীন ছুটে গেছে ২১ কিলোমিটার সড়ক। এই সড়ক অতিক্রম করতে সবাইকেই দেখা গেছে উচ্ছ্বসিত।
আজ শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) ভোরে মেরিন ড্রাইভের দরিয়ানগরের ভাঙারমুখ থেকে শুরু হয় এই ম্যারাথন। ২১ কিলোমিটার দূরত্বের পর উখিয়ার ইনানীতে গিয়ে শেষ হয় এই প্রতিযোগিতা। জাতীয় জীবনের মহান বীরদের স্মরণ করার পাশাপাশি মানুষকে স্বাস্থ্য সচেতন এবং কক্সবাজারের পর্যটনকে বিকশিত করতেই এই আয়োজন করা হয়ে বলে জানিয়েছে আয়োজকরা। এতে অংশ নেয়া ৩৯৮ প্রতিযোগীর মধ্যে ১১ জন বিদেশি দৌড়বিদও ছিলেন।
এতে পুরুষ বিভাগে ইমরান হাসান এবং নারী বিভাগে মেজর শাওলিন সিগমা চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। পুরুষ ক্যাটাগরিতে সেরা ১০ জনের মধ্যে ছিলেন আমেরিকান জেমেনি আর নারীদের মধ্যে আমেরিকান জানেলি।
অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও কক্সবাজার এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আসাদুল্লাহ মিনহাজুল আলম বলেন, শুধুমাত্র এই একটা ম্যারাথন সম্পন্ন করেই শেষ করছি তা না। যখন আবহাওয়া এমন মনোরম থাকবে তখন এ পরিবেশে সামনের দিনগুলোতে সাইকেল রেসিংয়ের একটা চিন্তা ভাবনা করছি।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন বলেন, বিজয় দিবস হাফ ম্যারাথনের উদ্দেশ্য অনেকগুলো। প্রথমত, আমাদের মহান বিজয় দিবসে আমাদের স্বাধীনতার যে চেতনা সেটি সমুন্নত রাখা। একই সাথে আমাদের আগামী দিনের যে নতুন বাংলাদেশ সেটিকে গড়ে তুলবার যে প্রয়াস সেটিকে সমুন্নত রাখা এবং চেতনাকে ধারণ করা। আমাদের তারুণ্যের যে শক্তি, তারুণ্যের উজ্জীবন এটিকে কাজে লাগিয়ে আমাদের আগামী দিনে দেশ গড়ার কাজে সকলের সম্মিলিত প্রয়াসকে অনুপ্রাণিত করা। একই সঙ্গে কক্সবাজারের পর্যটন সম্ভাবনাকে বিকশিত করাও উদ্দেশ্য বলে জানান তিনি।
ম্যারাথনে অংশ নেয়া আমেরিকান দম্পতি স্যাম ও জানেলি বলেন, সুন্দর দেশ সুন্দর রাস্তা, সাগর আর পাহাড়ের মাঝখানে দৌড়াতে বেশি ভালো লেগেছে। বাংলাদেশের মানুষ খুবই বন্ধু সুলভ, তাদের আতিথেয়তা বেশ উপভোগ করার মতো।
পুরুষ বিভাগে চ্যাম্পিয়ন ইমরান হাসান বলেন, বিজয় দিবস হাফ ম্যারাথনে অংশগ্রহণ করে আমি চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। এই আয়োজনকে সাধুবাদ জানাই। এ ধরনের আয়োজন যেন প্রতিটি বিভাগ, জেলা ও উপজেলাগুলোতে হয়। এতে করে তরুণরা উজ্জ্বীবিত হবে।
নারী বিভাগের চ্যাম্পিয়ন মেজর শাওলিন সিগমা বলেন, ম্যারাথনের জন্য মেরিন ড্রাইভ বাংলাদেশে সবচাইতে উপযুক্ত জায়গা। যেখানে প্রকৃতির সৌন্দর্য্য উপভোগের সাথে স্বাচ্ছন্দ্যে দৌড়ানো যায়।
ঢাকা থেকে আগত প্রতিযোগী রেহেনা আক্তার বলেন, ঢাকা থেকে অংশ নিতে কক্সবাজার এসেছি। ভালো লাগছে এতগুলো মানুষের সঙ্গে দৌড়াতে। সুন্দর পরিবেশ, সমুদ্রের সামনে দৌড়াচ্ছি এর থেকে মজার কিছুই হতে পারে না।
আরেক প্রতিযোগী প্রিয়া বলেন, অসাধারণ অনুভূতি। প্রথমবারের মতো মেরিন ড্রাইভে হাফ ম্যারাথনে অংশ নিয়েছি। এটা আমার কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
এদিকে কক্সবাজার জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহযোগিতায় ‘বিজয় দিবস হাফ ম্যারাথনের’ ব্যবস্থাপনায় ছিল কক্সবাজার রানার্স কমিউনিটি।