জামালপুরের মাদারগঞ্জে গরু চুরি করে কর্মী-সমর্থকদের জন্য ভূরিভোজ করে পদ হারিয়েছেন বিএনপির নেতা। একই ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আটক করেছে দুইজনকে।

অভিযুক্ত মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসান মুক্তা চৌধুরী। তিনি উপজেলার আদারভিটা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

গতকাল শনিবার (১১ জানুয়ারি) ওই ইউনিয়নের দক্ষিণ কয়ড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

মাদারগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. সাইদুর রহমান বলেন, গরু চুরির ঘটনায় ভুক্তভোগী কৃষক এফাজ উদ্দিন বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে মাদারগঞ্জ মডেল থানায় মামলা করেছেন। ওই মামলায় মাহমুদুল হাসান মুক্তা চৌধুরীকে তিন নম্বর আসামি।

মামলা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার সকালে মাদারগঞ্জ পৌরসভার জোনাইল রাইসিয়া বালিকা দাখিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে উপজেলা ও পৌর জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের আয়োজনে নারী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ওই সমাবেশে অংশ নেওয়া কর্মী-সমর্থকদের জন্য উপজেলার দক্ষিণ কয়ড়া গ্রামে ভূরিভোজের আয়োজন করেন আদারভিটা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসান মুক্তা চৌধুরী এবং তার স্ত্রী জেলা মহিলা দলের অর্থ ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদিকা লায়লা খাতুন ইতি।

অভিযোগ উঠে, ভোজের বিরিয়ানি রান্নার জন্য শুক্রবার রাতে জোরখালী ইউনিয়নের খামারমাগুরা গ্রামের কৃষক এফাজ মন্ডলের গোয়ালঘর থেকে একটি গরু চুরি করে জবাই করা হয়।

গরুর মালিক এফাজ মন্ডল জানান, রাতে গোয়াল ঘরে গরু রেখে ঘুমিয়ে পড়েন তিনি। মধ্যরাতে ঘুম ভেঙে গেলে তিনি দেখতে পান গোয়াল ঘরের দরজ খোলা ও ভেতরে থাকা তার ৯০ হাজার টাকা মূল্যের একটি গরু নেই। তার ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে ও বিভিন্ন জায়গায় গরুর খোজ করতে থাকেন। একপর্যায়ে শনিবার ভোরে পাশের দক্ষিণ কয়ড়া গ্রামে বিএনপি নেতা মাহমুদুল হাসান মুক্তা চৌধুরীর বাড়িতে চুরি হওয়া গরু জবাইয়ের খবর পান।

সুমন মন্ডল (৪০), বিজ্ঞ চৌধুরী (৪৫), কসাই বজলু প্রামাণিক (৪৫) ও কয়েকজন কর্মীর সহায়তায় বিএনপি নেতা মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসান মুক্তা চৌধুরী নিজেই গরুটি জবাই করেন বলেও জানা গেছে।

এদিকে গরুর মাংস দিয়ে কর্মী-সমর্থকদের জন্য বিরিয়ানি রান্নার পর আংশিক মাংস রেখে দেওয়া হয়। এরপর প্রতিবেশী ও স্থানীয়দের সহায়তায় গরুর চামড়াসহ একই এলাকার কসাই বজলু প্রামাণিককে হাতেনাতে ধরে ফেলেন কৃষক এফাজ মন্ডল।

মাদারগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. সাইদুর রহমান জানান, ‘গরু চুরির অভিযোগে অভিযান চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে সুমন মন্ডল ও বজলু প্রামাণিক কসাই নামে দুইজনকে আটক করা হয়েছে। তবে মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসান মুক্তা চৌধুরী ও তার স্ত্রী লায়লা খাতুন ইতি পলাতক রয়েছেন।

অভিযোগের বিষয়ে মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসান মুক্তা চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে উপজেলা বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট মঞ্জুর কাদের বাবুল খান বলেন, ‘দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের অভিযোগে মাহমুদুল হাসান মুক্তা চৌধুরীকে দল থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’