ব্যবসায়ীকে না পেয়ে তিনজনকে ১১ ঘণ্টা আটকে রাখে ডিবি

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৩৯

নারায়ণগঞ্জ জেলা ম্যাপ। ছবি: সাম্প্রতিক দেশকাল
খেলাপি ঋণের মামলায় পাট ব্যবসায়ীকে না পেয়ে তার মেয়ে, জামাই ও ম্যানেজারকে ১১ ঘণ্টা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে আটকে রাখে পুলিশ। আটকের সময় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ সাদা পোশাকে ছিল।
গতকাল সোমবার (১৩ জানুয়ারি) ভোরে ঢাকার বাড্ডায় তার মেয়ের জামাইয়ের নিজস্ব বাসা থেকে ব্যবসায়ী আব্দুল আলির মেয়ে শারমিন আক্তার, তার স্বামী এটিএম পারভেজ সাজ্জাদকে তুলে নেয়া হয়। অপর দিকে, নারায়ণগঞ্জের দেওভোগের বাসা থেকে শারমিন জুট মিলের ম্যানেজার জামান আহমেদকে আটক করা হয়।
তার আইনজীবী আওলাদ হোসেন জানান, আব্দুল আলি এক সময় অত্যন্ত ভালো ব্যবসায়ী ছিলেন। কিন্তু নানা কারণে ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে কমার্স ব্যাংকের নারায়ণগঞ্জ শাখায় ঋণখেলাপি হন তিনি। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। তাই তিনি পালিয়ে রয়েছেন। পালিয়ে থেকে তার অন্য সম্পত্তি বিক্রি করে দেনা শোধের চেষ্টা করছেন। তার দেনার শত গুনেরও বেশি মূল্যমানের সম্পত্তি বন্ধক রয়েছে ব্যাংকের কাছে। তার বাড়ি নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়কের জিমখানা এলাকায়। পুলিশ একাধিকবার এই বাড়িতে অভিযান চালিয়েও তাকে পায়নি। তাকে না পেয়ে ডিবি পুলিশ ব্যবসায়ী আব্দুল আলির মেয়ে শারমিন আক্তার, তার স্বামী এ টি এম পারভেজ সাজ্জাদ ও শারমিন জুট মিলের ম্যানেজার জামান আহমেদকে আটক করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের নগরীর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের জেলা গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে আটকে রাখা হয়। পরে সোমবার বিকেল চারটায় তাদের মুচলেকা রেখে ছাড়া হয়। তাদের বিরুদ্ধে কোনো পরোয়ানা নেই।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের ঢাকা দক্ষিণের সমন্বয়ক মাহবুবুর রহমান মাসুম বলেন, এটা সম্পূর্ণ মানবাধিকার লঙ্ঘন। বাবার অপরাধে মেয়ে, জামাই ও ম্যানেজারকে আটক করে আনা যায় না। একজন নারীকে গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে ওয়ারেন্ট ছাড়া ১১ ঘণ্টা আটকে রেখে পুলিশ ন্যাক্কারজনক উদাহরণ তৈরি করেছে।
নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেন, আব্দুল আলি মোটা অংকের ঋণখেলাপি। তাকে ধরার জন্য ওপর মহলের চাপ রয়েছে। তাই তার ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করতে এই তিনজনকে আনা হয়েছিল। পরে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।