
বরিশালের ম্যাপ। ফাইল ছবি
বরিশালে পাঁচ দিনের নবজাতককে শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সেতুর ওপর থেকে কীর্তনখোলা নদীতে ছুড়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে তার মায়ের বিরুদ্ধে।
গতকাল বুধবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে নগরীর দপদপিয়া এলাকায় এ ঘটনার পর থেকেই নবজাতক নিখোঁজ রয়েছে। বিষয়টি প্রথমে গোপন থাকলেও আজ বৃহস্পতিবার (১৭ জানুয়ারি) রাতে ঘটনাটি প্রকাশ পেলে নগরীজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
এদিকে শারীরিক ও মানুসিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে মা ঐশি আক্তারকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে ভর্তি রেজিস্ট্রারে মায়ের নাম গোপন করে রাবেয়া লেখানো হয়েছে। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতে কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশ হাসপাতালে ওই নারী ও তার স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
জানা গেছে, নবজাতকের মা ঐশি আক্তারের বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার মগড় ইউনিয়নের আমিরাবাদ গ্রামে। তিনি একই উপজেলার হয়বৎপুর তৌকাঠী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। ঐশির স্বামী সোহেল আহমেদ পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের স্টেশন অফিসার হিসেবে কর্মরত।
নবজাতকের বাবা সোহেল আহমেদ জানান, গত ১০ জানুয়ারি ভোরে শেবাচিম হাসপাতালে তার স্ত্রী ঐশি একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেন। এর দুইদিন পর স্ত্রী-সন্তানকে নগরীর বাংলাবাজার এলাকায় স্ত্রীর বড় বোনের বাসায় রেখে আসেন তিনি। বুধবার দুপুরে সন্তান কোলে নিয়ে সেখান থেকে বের হয় স্ত্রী ঐশি। পরে অটোরিকশাযোগে দপদপিয়ায় এলাকায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সেতুতে গিয়ে সন্তানকে কীর্তনখোলা নদীতে ছুড়ে ফেলে। এ ঘটনায় স্ত্রী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান তিনি।
নবজাতকের মামা মো. মাসুদ জানান, তার বোন শারীরিক অসুস্থতা। সে বিষণ্ণতায় ভুগেছেন। এজন্য তাকে বুধবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে নবজাতক শিশুটি কোথায় আছে, সে বিষয়ে বোন কিছুই বলতে পারছে না।
হাসপাতালে দ্বিতীয়বার ভর্তির ক্ষেত্রে ভিন্ন নাম ব্যবহারের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বোনের নাম রাবেয়া আক্তার ঐশি। তাই শুধুমাত্র রাবেয়া লেখানো হয়েছে।
শেবাচিম হাসপাতালের কর্মরত নার্সরা জানান, গত শুক্রবার এই হাসপাতালেই শিশুটি ভূমিষ্ট হয়। এরপর সোমবার স্বজনরা শিশুসহ তার মাকে বাসায় নিয়ে যায়। বুধবার বিকেলে ওই শিশুর মাকে ফের হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু শিশুটি তার সঙ্গে দেখা যায়নি। পরে লোকমুখে জানতে পেরেছি, শিশুটিকে নদীতে ফেলে দিয়েছেন তার মা।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত। আমাদের অনুসন্ধান চলছে। নবজাতকের মা অসুস্থ থাকায় তার কাছে থেকে পরিস্কারভাবে কিছুই জানা যাচ্ছে না।’