
ঝিনাইদহে মৎসজীবীদের মানববন্ধন ও সমাবেশ। ছবি: ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ইজারা বাতিল ও প্রকৃত জেলেদের মাঝে বাঁওড় ফিরিয়ে দেয়ার দাবিতে ঝিনাইদহে মানববন্ধন করেছেন মৎসজীবীরা। আজ রোববার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা প্রশাসকের অফিস চত্বরে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
পরে প্রতিবাদ সমাবেশে বাঁওড় মৎস্যজীবী আন্দোলন বাংলাদেশের আহ্বায়ক নির্মল হালদার বলেন, ‘বাঁওড় জলমহালে মাছ চাষে রাষ্ট্রের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রীয় অর্থায়ন জরুরি হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে জেলেদের সঙ্গে সরকারের ন্যায্য উৎপাদনের অংশীদারিত্ব চুক্তি থাকতে হবে। এছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতায় প্রকৃত বাঁওড় মৎস্যজীবীদের শুমারি করে তালিকাভুক্ত করে মৎস্যজীবী কার্ড দিতে হবে।’
সংগঠনটির সদস্য সচিব সুজন বিপ্লব বলেন, ‘ঝিনাইদহের মহেশপুর ও কোটচাঁদপুরের ফতেপুর, কাঠগড়া, বলুহর, জয়দিয়া বাঁওড়, কালীগঞ্জ উপজেলার মর্জাত বাঁওড় ও যশোরের চৌগাছা উপজেলার বেড় গোবিন্দপুর বাঁওড়ের ইজারা চুক্তি লঙ্ঘন করে সাব-লিজ দেয়া হয়েছে। যা বর্তমানে প্রচলিত জলমহাল নীতিমালার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এসব বাঁওড় ছাড়াও জেলার অন্য সব বাঁওড় ও জলাভূমি ইজারা দেয়ায় ভূমিহীন জেলে সম্প্রদায় জীবিকা হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।’
মৎস্যজীবী নিত্য হালদার অভিযোগ করেন, ‘প্রভাবশালী ও বাণিজ্যিক মৎসচাষিরা বাঁওড়ের ইজারা হাতিয়ে নিয়ে বাঁওড়ে দেশীয় প্রজাতির মা মাছ ও ছোট কার্প জাতীয় মাছের পোনা নিধন করছে। ফলে দেশি পুটি, শিং, কৈ, পাবদা, ফলি, মেনি, খলিসা, খয়রা, টেংরা, বাটা, গুতুম, কাকিলা, দেশি সরপুটি, বাইন, শোল, টাকি ও গজাড় মাছ বিলুপ্তি হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া বাঁওড়ে বাণিজ্যিক মৎসচাষিরা রাসায়নিক ও দ্রুতবর্ধনশীল ওষুধ প্রয়োগের ফলে বাঁওড়ের পানি দূষিত হয়ে পড়ছে।
প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাসুদেব বিশ্বাস। সমাবেশ শেষে মৎসজীবীরা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেন।
জেলেদের অভিযোগের বিষয়ে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বকুল চন্দ্র কবিরাজ জানান, সরকারি নীতিমালা মেনেই বাঁওড়গুলো ইজারা দেয়া হয়েছে। তাই জেলে সম্প্রদায়ের এই অভিযোগ সঠিক নয়।