স্কুলছাত্র হত্যা: থানা ঘেরাও কর্মসূচির আগেই এক আসামি গ্রেপ্তার

বরিশাল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯:৫৮

বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে এলাকাবাসী। ছবি- প্রতিনিধি
বরিশালের বাবুগঞ্জে চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্র রাব্বি হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আসামিদের গ্রেপ্তারে এলাকাবাসির দেয়া ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটামের তিন ঘণ্টার মধ্যেই সাকিব নামের ওই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার মো. সাকিব (২৭) বাবুগঞ্জ উপজেলার পূর্ব রহতমপুর এলাকার আব্দুস সত্তারের ছেলে। এছাড়া স্কুলছাত্র রাব্বি হত্যা মামলার ৩ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি। দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের বকশিরচর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে শনিবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের রহমতপুর ব্রিজে অবরোধ করে বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে এলাকাবাসী। এতে অংশ নেন নিহত রাব্বির বড় ভাই বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সাব্বির রহমান, বোন লামিয়া আক্তার, জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি সবুজ আকনসহ স্থানীয় সহস্রাধিক জনতা। ঘণ্টাখানেক সড়ক অবরোধের পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার করা না হলে থানা ঘেরাওয়ের আল্টিমেটাম দিয়ে মহাসড়ক ছাড়েন এলাকাবাসী।
এদিকে, সড়ক অবরোধের কারণে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সড়কের দুই প্রান্তে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন পড়ে সৃষ্টি হয় সীমাহীন যানজট। ভোগান্তিতে পড়তে হয় যাত্রী এবং শ্রমিকদের।
খবর পেয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাকির শিকদারসহ পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তারা এলাকাবাসির দেয়া ২৪ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
নিহতের বোন লামিয়া আক্তার বলেন, আমরা ২ নম্বর আসামি রেজাউলকে ধরে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছিলাম। কিন্তু পুলিশ তাকে ছেড়ে দিয়েছে। আমার ভাইয়ের হত্যাকারিদের ফাঁসি চাই।
বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি সবুজ আকন বলেন, রাব্বি স্কুলছাত্র হলেও ছাত্রদলের সকল কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতো। রাব্বি ছাত্র দলের সক্রিয় কর্মী ছিল। আমরা রাব্বি হত্যার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারসহ সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করছি।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ জাকির শিকদার বলেন, স্কুলছাত্র রাব্বি হাওলাদার হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার দাবিতে এলাকাবাসী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ এবং মানববন্ধন করেছে। তারা আসামি গ্রেপ্তারের জন্য ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়েছিল। আল্টিমেটাম দেওয়ার চার ঘণ্টার মধ্যেই আমরা এজাহারভুক্ত আসামি সাকিবকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, কী কারণে রাব্বিকে হত্যা করা হয়েছে সেটা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। গ্রেপ্তার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে কোনো তথ্য জানা গেলে গণমাধ্যমকে জানানো হবে।
উল্লেখ্য, নিখোঁজের চারদিন পর গত বুধবার সকালে পূর্ব রহমতপুর গোডাউন এলাকা থেকে রাব্বি হাওলাদার (১৮) এর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। রাব্বি ওই এলাকার বাচ্চু হাওলাদারের ছেলে।
এ ঘটনার দিন বিকেলে বরিশাল মেট্রোপলিটন এয়ারপোর্ট থানায় নিহতের বড় ভাই জেলা ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সাব্বির রহমান বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় বাবুগঞ্জ উপজেলার বকশির চর গ্রামের মৃত মুনসুর আলীর ছেলে সেন্টু হাওলাদার (৪৭), পূর্ব রহমতপুর গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজ খানের ছেলে রেজাউল খান (২৮), একই গ্রামের আব্দুর ছাত্তারের ছেলে সাকিব (২৭) ও হাকিম খন্দকারের ছেলে সাগর খন্দকারকে (২৮) এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৮ জনকে আসামি করা হয়।