
কক্সবাজারের চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুর কাদের ভূঁইয়া। ছবি: কক্সবাজার প্রতিনিধি
কক্সবাজারের চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) ৫৯ জনের বিরুদ্ধে আলাদা দুইটি মামলা হয়েছে আদালতে। একটি মামলার বাদী স্থানীয় সাংবাদিক মনছুর আলম মুন্না, আরেকটি মামলা করেন ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নের আকতার হোছাইন।
গতকাল মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আলাদা দুটি মামলা করা হয়।
মনছুর আলম মুন্নার করা মামলার প্রধান আসামি হলেন চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুর কাদের ভূঁইয়া। এছাড়া আরও আটজনকে আসামি করা হয়। তারা হলেন- একই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফরহাদ রাব্বি ইশান ও সোহরাব সাকিব, এএসআই পারভেজ ও চার অজ্ঞাত কনস্টেবল।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ওসি মনজুর কাদের ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় যোগদানের পর থেকে পেশাদারিত্বের বাইরে গিয়ে ঘুষ-দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায় ও হয়রানির অভিযোগ উঠে। এসব ব্যাপারে পত্রিকায় তথ্যবহুল সংবাদ প্রকাশিত হলে বাদী মনছুর আলমকে হত্যার হত্যার হুমকি দেন তিনি।
মনছুর আলম বলেন, ‘গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর গভীর রাতে প্রধান আসামি চকরিয়া থানার ওসির নির্দেশে কক্সবাজারের কৃষি অফিস সড়কে দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের কক্সবাজার অফিস থেকে আমাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এক দিন আটকে রেখে মিথ্যা মামলায় ওসি মনজুর আমাকে চালান দেন। ২১ দিন বন্দি থাকার পর জামিনে মুক্তি পাই।’
বাদীর আইনজীবী সালাহ উদ্দীন আহমদ বলেন, ‘সাজানো মামলায় ওসি নিজেই বাদী ও নিজেই রেকর্ডকারী কমকর্তা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া গভীর রাতে নিজের আঞ্চলিক এখতিয়ার বহির্ভূত এলাকায় গিয়ে একজন সাংবাদিককে ধরে এনে নির্যাতন করা আইনের পরিপন্থি ও মানবাধিকার লঙ্ঘন।’
আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওসমান গনি বলেন, ‘বিজ্ঞ বিচারক আকতার জাবেদ মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে ৪৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।’
চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবীব পলাশ বলেন, ‘মামলার বিষয়টি আমি অবগত নই। কেউ অন্যায় করলে তার বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
অভিযুক্ত ওসি মনজুর কাদের ভূঁইয়া বলেন, ‘মামলার বিষয়টি জেনেছি। তদন্তে যা হয়।’
একই আদালতে অপর মামলার বাদী ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নের অলিয়াবাদ এলাকার মৃত মোহাম্মদ ইলিয়াসের ছেলে আকতার হোছাইন।
২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মাওলানা সাঈদীর মুক্তিকে কেন্দ্র করে ঈদগাঁও স্টেশনের পাশে বাদীর ভাই আবদুর রশিদের মৃত্যুর ঘটনায় এ মামলা করা হয়। এতে প্রধান আসামি করা হয়েছে ওই সময়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মনজুর আলমকে (ডিবি)। মামলার দ্বিতীয় আসামি বর্তমান চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবং ওই সময় ঈদগাঁও পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মনজুর কাদের ভূঁইয়া। মামলাটিতে পুলিশসহ ৫১ জনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ ছাড়া অন্য আসামিরা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
বাদী পক্ষের আইনজীবী আমির হোছেন জানান, পুলিশসহ আওয়ামী লীগের লোকজন গুলি করে রশিদকে হত্যা করে। মামলাটি আমলে নিয়ে ডিবিকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।