Logo
×

Follow Us

জেলার খবর

বিসিসির ভুল তথ্যে টিসিবির ৬০ হাজার ফ্যামিলি কার্ড বাতিলের অভিযোগ

Icon

বরিশাল প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৭:৪৮

বিসিসির ভুল তথ্যে টিসিবির ৬০ হাজার ফ্যামিলি কার্ড বাতিলের অভিযোগ

মানববন্ধনে অংশ নেয়া পরিবারগুলো। ছবি- বরিশাল প্রতিনিধি

বরিশালে বাংলাদেশ ট্রেডিং করপোরেশনের (টিসিবি) ৯০ হাজার ফ্যামিলি কার্ডের মধ্যে সাড়ে ৫৮ হাজার কার্ড বাতিল করা হয়েছে। ৩১ হাজার পরিবারকে দেয়া হয়েছে নতুন ফ্যামিলি স্মার্ট কার্ড। এর ফলে টিসিবি কার্য থেকে বঞ্ছিত হয়েছেন অসংখ্য অসহায় এবং দুস্থ পরিবার।

কার্ড না পাওয়া পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড বিতরণে অনিয়ম করেছে বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) ও টিসিবি। এর প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করছে কার্ড বঞ্ছিতরা। 

আজ মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় নগরীর কাউনিয়া প্রধান সড়কের (মানিক মিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়’র) সামনে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে অংশ নেয়া পরিবারগুলোর দাবি, অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি করে ফ্যামিলি স্মার্ট কার্ডের তালিকা করা হয়েছে। সেই তালিকা বাতিল করে অবিলম্বে প্রকৃত অসহায় পরিবারগুলোকে ফ্যামিলি কার্ডের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানান তারা।

তবে কার্ড বাতিলের দায় নিতে চাচ্ছে না টিসিবি কিংবা সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। টিসিবি কর্মকর্তাদের দাবি সিটি করপোরেশন ভুল তথ্য দেওয়ায় ৯০ হাজার কার্ডের মধ্যে সাড়ে ৫৮ হাজার কার্ড বাতিল হয়েছে। অপরদিকে বিসিসি কর্মকর্তারা বলেছেন, কার্ড বাতিল করেছে টিসিবি।

নগরীর ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সাজেদা খাতুন বলেন, ইতোপূর্বে আমার নামে টিসিবির ফ্যামিলি কার্ড বরাদ্দ ছিল। যা এবার স্মার্টকার্ড হিসেবে নতুন তালিকায় বাতিল হয়ে গেছে। এখন আর তেল, চিনি পাবেন কি না, সেই চিন্তায় দিশেহারা। আসন্ন রোজায় কীভাবে চলবে সংসার এটাই এখন বড় চিন্তা।

১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ইউনুস খান বলেন, টিসিবির যে কার্ডটি ছিল তা দিয়ে ন্যায্য মূল্যে যে তেল, চিনি, ডাল পেতাম তা দিয়ে মোটামুটিভাবে কেটে যেতো। এখন এক পরিবারে একাধিক কার্ড দাবি করে আমার কার্ডটি বাতিল করা হয়েছে। অথচ আমার পরিবারে একমাত্র আমিই পেয়েছিলাম। এখন কিভাবে পরিবার নিয়ে চলবো তা বুঝে উঠতে পারছি না।

এই দুটি ওয়ার্ডেই নয়। নগরী ঘুরে দেখা গেছে, ফ্যামিলি কার্ড বাতিল হওয়ায় ৩০টি ওয়ার্ডেই অসন্তোষ দেখা দিয়েছে সাধারণ মানুষের মাঝে। অস্থায়ী কাউন্সিলর কার্যালয়ে গিয়ে দিনের পর দিন হয়রানির শিকার হচ্ছেন ভুক্তভোগীরা।

নগরীর ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর, একেএম মুর্তজা আবেদিন বলেন, অনেকের বাড়িতেই একাধিক কার্ড এসেছে, আবার সাবেক একজন কাউন্সিলরের নিজের নামেও কার্ড এসেছে, যারা কার্ড পাওয়ার তারা পাচ্ছে না, অন্যদিকে যাদের ভবন রয়েছে তারা একাধিক কার্ড পাচ্ছে, এই বৈষম্য নিরসন হওয়া দরকার।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বরিশাল কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শতদল মণ্ডল বলেন, বরিশাল নগরীতে প্রায় সাড়ে ৫৮ হাজার কার্ড কীভাবে বাতিল হলো, তা সিটি করপোরেশন জানে। আমরা তথ্য দেইনি। জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশন তথ্য দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কার্ডগুলো বাতিল তো টিসিবিই করেছে। তবে কেন বাতিল হলো, তথ্যে কী ত্রুটি ছিল, তা দেখবে সিটি করপোরেশন। তথ্যে যদি ভুল থাকে তাহলে টিসিবির কী করার আছে। তবে যাদের কার্ড বাতিল হয়েছে তারা নতুন করে তথ্য সাবমিট করলে যে শূন্য স্থান আছে সেখানে নতুন করে উপকারভোগী নেওয়া হবে বলে জানান টিসিবির এই কর্মকর্তা।

এ প্রসঙ্গে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার মো. রায়হান কাওছার বলেন, এক কোটি কার্ডের মধ্যে ৫৭ লাখ কার্ড বাতিল হয়েছে। এর মধ্যে বরিশাল সিটি করপোরেশনের ৯০ হাজার কার্ডের মধ্যে মাত্র ৩১ হাজার কার্ড আমরা পেয়েছি। আরো প্রায় ৫ হাজার কার্ড আসার অপেক্ষায় রয়েছে। আমরা নিজ উদ্যোগে কোনো কার্ড বাতিল করিনি, টিসিবি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সফটওয়্যারে যাচাই-বাছাইকালে যেসব পরিবারের একাধিক সদস্য পাওয়া গেছে সেগুলোর মধ্যে একটি রেখে বাকিগুলো বাতিল করেছে।

এছাড়া অনেক তথ্য অসম্পূর্ণ ও ভুল থাকায় সেগুলো বাতিল হয়েছে। তবে এর বাইরে শুধুমাত্র মোবাইল নম্বর যথাযথ না থাকায় অনেক কার্ড উপকারভোগীর বদলে অন্য কারো নামে চলে এসেছে বলে আমরা শুনেছি। এসব ক্ষেত্রে এটি সংশোধন করা হবে। তবে স্মার্টকার্ড এখন পর্যন্ত অ্যাক্টিভেট হয়নি। এটি যাচাই-বাছাই করে অ্যাক্টিভেট করা হবে। আর যাদের বাতিল হয়েছে তাদের যৌক্তিক কারণ থাকলে সেগুলো খতিয়ে দেখা হবে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫