Logo
×

Follow Us

জেলার খবর

চাকরি না করেও বাজিমাত

Icon

আহমেদ নাসিম আনসারী

প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০৬

চাকরি না করেও বাজিমাত

ব্যতিক্রমী কুমড়াবড়ি তৈরির কারখানা। ছবি: ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

অন্য আর সবার মতো সোনার হরিণ চাকরির পেছনে ছোটেননি তিনি। নিজে কিছু করার প্রত্যয়ে ঝিনাইদহে বাণিজ্যিকভাবে গড়ে তুলেছেন ব্যতিক্রমী কুমড়াবড়ি তৈরির কারখানা। গ্রামের দুস্থ-অসহায় ৩০ নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান করেছেন অজপাড়াগাঁয়ে। স্বাস্থ্যসম্মত ও সুস্বাদু এ বড়ি পৌঁছে যাচ্ছে দেশের প্রায় সব বিভাগে।

এমন এলাহী কাণ্ড না দেখলে বিশ্বাস হবে না। ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার গাড়াগঞ্জ এলাকার শিক্ষিত যুবক ওয়াহিদ হাসানের কুমড়াবড়ি তৈরির কারখানায় গেলে বিস্মিত হতে হয়। স্বামীহারা আলেয়া খাতুন বলেন, গত প্রায় পাঁচ বছর এখানে কাজ করছি। বাড়ির পাশে হওয়ায় আসতে ও যেতে কোনো অসুবিধা হয় না। কেউ পান ১৫০ টাকা আবার কেউ পান ৩০০ টাকা।

কমলা বেগম বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই আমরা প্রায় ৩০ জন কাজ করি দৈনিক মজুরিতে। কাজের ওপর নির্ভর করে পারিশ্রমিক ধার্য করা হয়। ভোর থেকে সকাল ১২টা পর্যন্ত। আমাদের সংসারের কাজেরও কোনো সমস্যা হয় না। বরং বাড়তি আয় হওয়ায় পরিবারের সবাই খুশি।’

সালমা খাতুন নামের একজন জানান, বড়ি তৈরির উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয় কালো মাষকালাই ডাল ও চালকুমড়া। ডাল ও কুমড়ার মিশ্রণে মেশিনে পেস্ট তৈরি করে প্রতিদিন সকালে নেটের ওপর ছোট ছোট করে বড়ি তৈরি করে শুকানো হয় রৌদ্রে। তাদের কারখানায় কাজ করে তিনজন পুরুষ ও ২৭ জন নারী। বাড়ির কাজের পাশাপাশি তিন-চার ঘণ্টা বড়ি তৈরি করে নারীরা যা পারিশ্রমিক পান তা দিয়ে ভালোই চলে তাদের সংসার।

ইসলাম মিয়া জানান, বড়ি তৈরি করে রোদে শুকিয়ে প্যাকেট করে ঢাকা, খুলনা, চিটাগং, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। বাণিজ্যিকভাবে কুমড়াবড়ি তৈরি হওয়ায় সবাই এখন এই সুস্বাদু খাবারের স্বাদ নিতে পারছে। শিক্ষিত এই যুবক নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি অনেকেরই কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন।

উদ্যোক্তা ও কারখানার মালিক ওয়াহিদ হাসানের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকা কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে লেখাপড়া শেষ করে চাকরির পেছনে না ছুটে ব্যবসায়ের পাশাপাশি করেছেন কুমড়াবড়ি তৈরির কারখানা। তিনি জানান, প্রায় ছয় বছর হলো তিনি এ কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন। সারা দেশ থেকে অনলাইনের মাধ্যমে অর্ডার নেন। সে অনুযায়ী ডেলিভারি করা হয়। স্থানীয় বাজারেও এর চাহিদা ভালো।

তিনি আরো জানান, আগামী তিন মাস চলবে বড়ি তৈরির কাজ। প্রতিদিন ১০ মন বড়ি তৈরিতে খরচ হয় প্রায় ৪৫ হাজার টাকা, যা থেকে ছয়-সাত হাজার টাকা লাভ হয়। প্রতি কেজি কুমড়াবড়ি বিক্রি হয় ৩০০ টাকা কেজি দরে।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫