
সলপের ঐতিহ্যবাহী ঘোলের দোকান। ছবি: সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার সলপের ঐতিহ্যবাহী ঘোলের খ্যাতি দেশজুড়ে। ঘোল তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটে কারখানার কর্মীদের। রোজার শুরু থেকেই ঘোলের চাহিদা বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। এর ফলে কর্মব্যস্ততাও বেড়েছে ঘোলকর্মীদের।
উল্লাপাড়া ছাড়াও পার্শ্ববর্তী উপজেলা বেলকুচি, কামারখন্দ, সিরাজগঞ্জ সদর, শাহজাদপুর থেকে ক্রেতারা প্রতিনিয়ত সলপ স্টেশনে ঘোল ও মাঠা কিনতে আসেন। প্রতি কেজি ঘোল বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা এবং মাঠা ১২০ টাকা।
ব্রিটিশ আমল থেকে তৎকালীন সলপ সান্যাল জমিদারের পৃষ্ঠপোষকতায় ঘোলের কারখানা গড়ে ওঠে। ওই সময় কলকাতাতেও যেত এই ঘোল। তখন থেকেই সলপের ঘোলের খ্যাতি ছড়িয়ে পরেছে বাংলাদেশ ও ভারতে।
সলপে ৮ থেকে ১০টি ঘোলের কারখানা রয়েছে। প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ মণের বেশি ঘোল উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে আব্দুল মালেক, আব্দুল খালেকের কারখানায় বেশি ঘোল উৎপাদিত হয়। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় এই ঘোলের চাহিদা রয়েছে। ভোর হতেই বিভিন্ন জেলায় পৌঁছানোর জন্য প্যাকেট করা হয়। ক্রেতারা এসে ঘোল নিয়ে যায়।
ঘোল ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান খান বলেন, “আমার বাবা সাদেক খান এই ব্যবসা শুরু করেন। তার মৃত্যুর পর আমি এই প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছি। এখন আমার দুই ছেলে আব্দুল খালেক ও আব্দুল মালেকও ব্যবসা করছে। সঙ্গে আরও অনেক নতুন দোকান হয়েছে। আমাদের এখানকার ঘোল ও মাঠা বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে।”
বেলকুচি থেকে ঘোল কিনতে আসা শাহিন বলেন, “সলপের ঘোলের স্বাদ অতুলনীয়। মাঝে মাঝেই আমি ঘোল কিনে নিয়ে যাই।”
রাহেলা খাতুন নামে এক নারী বলেন, “ইফতারির সময় সলপের ঘোল আমার লাগবেই। এই জন্য সকাল সকাল ঘোল কিনতে চলে এসেছি।”
ঘোল বিক্রেতা আব্দুল মালেক বলেন, “রমজান মাসে ঘোলের চাহিদা অনেক বেশি থাকে। বিশেষত সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা ব্যবসায়ীরা এখান থেকে পাইকারি দামে ঘোল কিনে নিয়ে যান। রমজানে ঘোলের চাহিদা বাড়লেও দাম না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন ব্যবসায়ীরা।”
সিরাজগঞ্জ শহরের বাজার স্টেশনে ঘোল কিনতে আসা আবুল হোসেন বলেন, “এই রোজায় প্রতিদিনই আমরা ঘোল কিনতে আসি। শহরের বিভিন্ন এলাকাতে সলপের ঘোল বিক্রি হচ্ছে।”