চট্টগ্রামে ৬ জনকে হত্যা: ১৫ জনের বিরুদ্ধে পরোয়ানা

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২৫, ১৭:৫৫

সাবেক মন্ত্রী হাছান মাহমুদ (বামে) ও মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। ফাইল ছবি
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে চট্টগ্রাম মহানগরে ছয়জনকে হত্যার মামলায় সাবেক মন্ত্রী হাছান মাহমুদ ও মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
মঙ্গলবার মামলার প্রাথমিক তদন্ত শেষে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করে তদন্ত সংস্থা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৬ জুলাই চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহর ও মুরাদপুর এলাকায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ছাত্র-জনতার ওপর হামলা এবং গুলি চালায়।
এ ঘটনায় ছাত্রদল কর্মী ওয়াসিম আকরাম, শিবিরকর্মী ফয়সাল আহমেদ শান্ত ও ফার্নিচার ব্যবসায়ী মো. ফারুক গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
এরপর ১৮ জুলাই চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ছোড়া গুলিতে দোকান কর্মচারী সাইমন, আশেকানে আউলিয়া ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী তানভীর সিদ্দিকী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হৃদয় চন্দ্র তরুয়া নিহত হয়।
ওই দুই ঘটনার মামলায় ১৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
আসামিদের মধ্যে সাবেক মন্ত্রী হাছান মাহমুদ, চট্টগ্রামের সাবেক দুই মেয়র আ জ ম নাছির ও রেজাউল করিম, তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া উপ-কমিটির সদস্য নুরুল আজিম রনি রয়েছেন।
এছাড়া জুলাই আন্দোলনে রাজধানীর মোহাম্মাদপুরে অস্ত্র উঁচিয়ে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি করে মানুষ হত্যার ঘটনায় আনসার সদস্য ওমর ফারুককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।
চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “চট্টগ্রাম মহানগরীতে জুলাই-আগস্টে গণহত্যা চলাকালে যে হত্যাকাণ্ড হয় এর সিংহভাগের সঙ্গে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জড়িত।
“তদন্ত সংস্থার কর্মীরা মাঠ পর্যায়ে তদন্ত করে ভিডিও ফুটেজ ও পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে তাদের চিহ্নিত করেছে। এতে ১৫ জনের বিরুদ্ধে হামলায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠেছে।”
অভিযুক্তদের মধ্যে অন্যতম হলেন সাবেক মন্ত্রী হাছান মাহমুদ, চট্টগ্রামের সাবেক দুই মেয়র আ জ ম নাছির ও রেজাউল করিম, তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও ছাত্রলীগ নেতা নুরুল আজিম রনি।
মঙ্গলবার তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার জারির আবেদন করেন বলে জানান তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, “শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল ১৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দিয়েছে।”
এই আইনজীবী জানান, মো. ফিরোজ নামের একজন আসামি কারাগারে আছেন। তিনি অভ্যুত্থানের সময় হামলায় সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি অন্য মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। তাকেও এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়।
এসব ঘটনার বাইরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় করা মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দুই মাস সময় দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।
ওই মামলার ওমর ফারুক নামের একজন আনসার সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।