নোয়াখালীতে যাত্রীবাহী বাসকে ৪০ কিমি ধাওয়া, গুরুতর আহত চালক

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ এপ্রিল ২০২৫, ১৭:৪১

সংগৃহীত ছবি
ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে নোয়াখালী যাওয়ার পথে একুশে পরিবহনের একটি বাস ধরতে মোটরসাইকেল নিয়ে ধাওয়া করেন এক দল যুবক। এ সময় তরুণদের ছোড়া ইটের আঘাতে গুরুতর আহত হয়েছেন বাসচালক মো. সোহেল।
এ বিষয়ে পুলিশ বলছে, মোটরসাইকেলকে সাইড না দেওয়ায় ওই তরুণরা বাসটির চালকের ওপর হামলা চালিয়েছেন বলে জেনেছে তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলন্ত বাসে তরুণদের ছোড়া ইটের আঘাতে বাসচালক সোহেলের মাথা ও চোয়ালে ৩১টি সেলাই লেগেছে।ভেঙে গেছে নিচের পাটির দুটি দাঁত। তবে তার অবস্থা এখন উন্নতির দিকে বলে জানিয়েছে মাইজদী সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা রাজীব আহমেদ।
আরও জাণা গেছে, গত সোমবার মধ্যরাতে একুশে পরিবহনের যাত্রীবাহী ওই বাস ঢাকা থেকে নোয়াখালীতে যাচ্ছিল। কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এলাকা পার হলে ৮ থেকে ১০টি মোটরসাইকেলে করে একদল তরুণ বাসটির অনুসরণ শুরু করেন। প্রায় ৪০ কিলোমিটার বাসটিকে ধাওয়া করেন তারা। বাসটিকে থামাতে না পেরে মোটরসাইকেলের আরোহীরা প্রথমে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীর ছাতারপাইয়া রাস্তার মাথায় ওপর বেগমগঞ্জের আবদুল মালেক মেডিক্যাল কলেজের সামনে চালক সোহেলকে উদ্দেশ্য করে ইট ছুঁড়লে এতে তার চোয়াল থেঁতলে যায়। কিন্তু যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে বাস চালিয়ে যান তিনি। এতে যাত্রীরা রক্ষা পেলেও চালক সোহেল গুরুতর আঘাত পান। পরে তাকে মাইজদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে বাসচালকের সহকারী মোহাম্মদ রাহাত বলেন, দুই দফায় ইটের আঘাত লাগে সোহেলের মাথায়। প্রথম আঘাতের পর তার মুখ থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে থাকে , কিন্তু তিনি থেমে যাননি। যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে বাস চালিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এছড়াও, যাত্রীদের জীবনের নিরাপত্তার কথা ভেবে ও দুর্ঘটনা এড়াতে পথে কোনো যাত্রীকে আমরা নামতে দেইনি। সরাসরি নোয়াখালীর সুধারাম থানার সামনে গিয়ে আমরা স্টপেজ নেই এবং সব যাত্রীকে সেখানেই নিরাপদে নামিয়ে দেই।
এ বিষয়ে বাস মালিক মো. জহিরুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর সুধারাম মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে গেলে সেখানকার পুলিশ সোনাইমুড়ী থানায় যাওয়ার পরামর্শ দেন। পরে সোনাইমুড়ী থানাও সেখানে অভিযোগ না নিয়ে আমাদের আবার লাকসাম থানায় যাওয়ার পরামর্শ দেন।
হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা অঞ্চলের পুলিশ সুপার মো. খায়রুল আলম এ ঘটনায় জানিয়েছেন, হামলাকারীরা ডাকাত নন। ঘটনাস্থলের একটি দোকানের সামনের ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার (সিসি) ফুটেজে দেখা গেছে, ঈদের দিন সোমবার রাতে দোকানের সামনে একদল তরুণ ঈদ উদযাপন করছিলেন। এ সময় তাদের মোটরসাইকেলকে সাইড না দিয়ে একুশে পরিবহনের বাসটি চালানো হচ্ছিল। তারা বাসটি থামাতে চাইলে বেপরোয়া গতিতে চালিয়ে যেতে থাকেন চালক। এ অবস্থায় ৮-১০টি মোটরসাইকেল আরোহীরা বাসটি ধাওয়া করেন এবং সেই ক্রোধ থেকেই হয়ত যুবকদল বাসটির চালককে ইটপাটকেল ছুড়ে আহত করেছেন।
একপর্যায়ে, চালকের পক্ষে মামলা না নেওয়া প্রসঙ্গ উঠলে সে বিষয়ে মো. খায়রুল আলম বলেন, হাইওয়ে পুলিশের মামলা নেওয়ার কিংবা তদন্ত করার ক্ষমতা নেই এ জন্যেই হয়ত তারা মামলাটি নেয়নি।