
জামালপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত। ছবি: প্রতিনিধি
জামালপুরে রফিকুল ইসলাম গাদু হত্যা মামলায় দুজনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বাকি ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেওয়া হয়।
বুধবার দুপুরে জামালপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২-এর বিচারক মো. আবু বকর সিদ্দিক এই রায় দেন।
রায়ে আসামি লেবু মিয়া ও মজনু মিয়াকে হত্যা ও অপহরণে জড়িত থাকার দায়ে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং মরদেহ গুমের ঘটনায় সাত বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া তাদের আর্থিক জরিমানা করা হয়।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী একেএম নাজমুল হুদা জানান, ১৯৯৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর রাতে জামালপুর সদরের হাসিল গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম গাদু নিজের বাড়ির পাশের পুকুর পাহারা দিতে গিয়ে আর ফিরে আসেননি। রাত পার হলেও তার কোনো খোঁজ না পেয়ে পরদিন সকালে স্ত্রী লাইলী বেগম খোঁজ করতে গিয়ে দেখতে পান পুকুর পাড়ের ছাপরা ঘরের বিছানা এলোমেলো। ঘরের ভেতরে ধস্তাধস্তির চিহ্ন রয়েছে এবং একটি গামছা পড়ে আছে। পরে সেটি স্থানীয় লেবু মিয়ার বলে শনাক্ত করে প্রতিবেশীরা।
নিখোঁজের পাঁচ দিন পর ১৯৯৮ সালের ২৮ ডিসেম্বরে এক প্রতিবেশীর বাড়ির টয়লেটের ট্যাংকের ভেতর থেকে পুলিশ গাদুর লাশ উদ্ধার করে। তার গলায় একটি মাফলার প্যাঁচানো ছিল। পরবর্তীতে মাফলারটি মজনু মিয়ার বলে শনাক্ত করা হয়।
ঘটনার পর দিন নিহতের স্ত্রী লাইলী বেগম জামালপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। শুরুতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হলেও পুলিশ তদন্ত শেষে ২০০০ সালের ৬ জুন লেবু মিয়াসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
মামলায় মোট ১৯ জন সাক্ষীর স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এই রায় দেন বিচারক। রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি। রায় ঘোষণার পর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। দীর্ঘ ২৬ বছর পর এই রায়ে সন্তুষ্টি জানিয়েছে বাদী পক্ষ।