Logo
×

Follow Us

জেলার খবর

পুনর্নির্মাণ হচ্ছে ৫০০ বছরের পুরোনো বারদুয়ারী মসজিদ

Icon

রফিক মজিদ

প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০:১৯

পুনর্নির্মাণ হচ্ছে ৫০০ বছরের পুরোনো বারদুয়ারী মসজিদ

বারদুয়ারী মসজিদ। ছবি: শেরপুর প্রতিনিধি

শেরপুরের বারদুয়ারী মসজিদ একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন। ধারণা করা হয় ভারতীয় উপমহাদেশ ইংরেজ শাসনাধীন থাকার আগে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে ইংরেজদের শাসনামলে এক ভয়াবহ ভূমিকম্পে এটি মাটির নিচে দেবে যায় এবং স্থানটি জঙ্গলে রূপান্তরিত হয়। অপর একটি ইসলামী ইতিহাস সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৭০০ বছর আগে বর্তমান বাংলাদেশে আরব থেকে যখন প্রথম ইসলাম প্রচারে মুসলমানরা আসেন, ওই সময়ের একটি দল এই এলাকায় এসে ইসলাম প্রচার শুরু করে। ধারণা করা হয়, ওই সময় মসজিদটি নির্মাণ করা হতে পারে।

এদিকে জামালপুরে আব্দুল আজিজ নামের একজন মাওলানা ষাটের দশকে শেরপুর জেলার শ্রীবরদীতে ভূমি জরিপ কার্যালয়ে পিএলএ পদে চাকরি করতেন। জনশ্রুতি আছে, তিনি স্বপ্নে দেখতে পান বারদুয়ারী মসজিদটি মাটির নিচে চাপা পড়ে আছে। এরপর তিনি জামালপুর থেকে শেরপুর আসেন এবং কয়েক দিন অবস্থান করে এলাকার প্রবীণ লোকদের নিয়ে জঙ্গলে আসেন। কিন্তু জঙ্গল বড় হওয়ায় স্থানটি নির্ধারণ করা কঠিন হয়ে পরে। 

পরবর্তী সময়ে একটি উপায় বের করলেন, অর্থাৎ চোখ বন্ধ করে একটি পাথর নিক্ষেপ করলেন এবং আগেই উপস্থিত জনতাকে বললেন, পাথরটি কোথায় পড়ে তাতে নজর রাখতে। পাথরটি পড়ে মসজিদের উত্তর দেওয়ালের পাশে। তখন মাটি খুঁড়তে থাকেন, ১০ ফুট খননের পর উত্তর ওয়ালের সন্ধান মেলে। তারপর ধাপে ধাপে পুরো মসজিদটি বের করেন, মসজিদটি মাটির নিচে চাপা পড়া থাকায় বিভিন্ন সাইড বিনষ্ট হয়ে যায়। পরে স্বপ্নে দেখা নকশা অনুযায়ী নির্মাণ কাজ শুরু করা হয় (১৯৬৩)। স্বপ্নে দেখা মসজিদের নকশায় ছিল ১২টি দরজা ও তিনটি গম্বুজ। পরে স্থানীয় লোকজন মসজিদের চারপাশে থাকা তাদের জমিগুলো স্বেচ্ছায় দান করে দেন মসজিদের নামে এবং মসজিদটি সংস্করণ করেন।

মসজিদ নির্মাণের জন্য দান বাক্স তৈরি করা হয়। তার পর থেকে মসজিদের সব উন্নয়নমূলক কাজ হয়ে থাকে দান বাক্সের টাকায়। মসজিদ নির্মাণ শেষ হওয়ার কিছুদিন পর মাওলানা আব্দুল আজিজ মৃত্যু বরণ করেন।

মূল মসজিদটি একতলাবিশিষ্ট হলেও বর্তমানে আধুনিক স্থাপত্যকলায় পাঁচতলার নির্মাণকাজ চলছে। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে অনেক লোক আসে অপরূপ নকশা ও কারুকার্য খচিত মসজিদটি দেখতে এবং নামাজ আদায় করতে। শুক্রবার নামে মানুষের ঢল। পুনরায় নির্মীয়মাণ মসজিদে একত্রে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ নামাজ আদায় করতে পারবে। 

জেলার শ্রীবর্দী উপজেলার গরজরিপা ইউনিয়নে বারদুয়ারী মসজিদটি অবস্থিত। প্রাচীনকালে গরজরিপা ছিল শেরপুরের রাজধানী। 

মসজিদটির খেদমতের জন্য রয়েছেন একজন খতিব, একজন স্থানীয় ইমাম, একজন মুয়াজ্জিন ও একজন খাদেম। মসজিদটির ১২টি দরজা থাকায় এর নাম দেওয়া হয়েছে বারদুয়ারী মসজিদ।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫