বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টা চালিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) বাধায় কাজ বন্ধ করে পিছু হটেছে বিএসএফ।

বুধবার দুপুরে নেত্রকোণা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার ২নং দুর্গাপুর ইউনিয়নের ভবানীপুর সীমান্তে এই ঘটনা ঘটে।

ঘটনার পর সীমান্তবর্তী ওই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করলেও সন্ধ্যার পর থেকে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

এ ঘটনায় এলাকায় নজরদারী বাড়িয়েছে বলে এই তথ্য নিশ্চিত করেন ৩১ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এস এম কামরুজ্জামান (পিবিজিএম)।

জানা যায়, বুধবার দুপুরের দিকে ১১৫৬ নং সীমান্ত পিলারের কাছেই আন্তর্জাতিক সীমানা আইন লঙ্ঘন করে বিএসএফ সদস্যরা কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের জন্য কাজ শুরু করে। সীমান্ত এলাকায় বেড়া নির্মাণ করছে এমন খবর পেয়ে বিজিবির জওয়ানরা ওই স্থানে অবস্থান নিয়ে তাদের বেড়া নির্মাণ কাজে বাধা দেয়। বিএসএফ বাধা উপেক্ষা করে বেড়া নির্মাণের চেষ্টা করলে বিজিবির সঙ্গে এলাকাবাসীও তীব্র প্রতিবাদ জানায়। তীব্র প্রতিবাদের বিএসএফ সদস্যরা পিছু হটতে বাধ্য হয়।

কৃষক তোতা মিয়া জানান, আমাদের দেশের রাস্তা ও ব্রিজের কাজ চলমান থাকায় ভারতের একটা রাস্তা ব্যবস্থার করতে হয়। এর ফলে বিএসএফ আমাদের গায়ে পড়ে ঝগড়া করতে আসে। বর্ষার আগে রাস্তা নির্মাণ কাজ শেষ না করা হলে গ্রামের মানুষ চরম বিপাকে পড়বে। রাস্তা নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করতে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি দেওয়া জরুরি।

দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাভিদ রেজওয়ানুল কবীর জানান, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফ কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের কাজ করতে আসলে বিজিবি ও স্থানীয় জনতার প্রতিবাদের মুখে বেড়া নির্মাণ কাজ বন্ধ করে বিএসএফ পিছু হঠতে বাধ্য হয়।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল এএসএম কামরুজ্জামান জানান, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী ভবানীপুর সীমান্তের বাংলাদেশ অংশে সোমেশ্বরী নদীর পাড় ভেঙে বাংলাদেশ অংশে মাত্র ১ গজ জায়গা বাকি আছে। তারপর ভারতীয় সীমান্ত পিলার। ভারতের প্রায় দেড়শত গজ অভ্যন্তরের রাস্তাটি দিয়েই বাংলাদেশিরা চলাচল করে। নদী ভাঙনের ফলে এই রাস্তাটিই দুদেশের চলাচলের একমাত্র রাস্তা। বিএসএফ নিয়মিত এই রাস্তা দিয়ে টহল দেয়।

বাংলাদেশীরা এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করায়, টহলে এসে বিএসএফ সদস্যরা বিজিবিকে এই বিষয়ে অভিযোগ দেয়। এর আগেও চার/পাঁচবার বিএসএফ কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টা করে। তারপর এখন আবার বেড়া নির্মাণ করতে আসে। আমাদের দেশের মানুষ ভারত সীমান্ত দিয়ে চলাচল করে। দ্রুত রাস্তা নির্মাণ কাজ শেষ না করা হলে এ সমস্যা থেকেই যাবে। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।