বাবার কবর জিয়ারতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার সেই শহীদকন্যার আত্মহত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৩০

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। (ফাইল ছবি)
পটুয়াখালীর দুমকিতে বাবার কবর জিয়ারত করতে গিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার সেই কিশোরী আত্মহত্যা করেছেন।
শনিবার রাত নয়টার দিকে রাজধানীর আদাবর থানা এলাকার শেখেরটেকের ৬ নম্বর রোডের একটি বাসায় মেয়েটি আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় এই কিশোরীর বাবা প্রাণ হারান। গত ১৮ মার্চ দুমকিতে বাবার কবর জিয়ারত করতে যাওয়ার সময় সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন মেয়েটি।
গভীর রাতে কিশোরীর মামা সাম্প্রতিক দেশকালকে বলেন, “আমার ভাগ্নি পটুয়াখালীতে গত ১৮ মার্চ ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর থেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল। ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য শনিবার তাকে নিয়ে আমার বোনের গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল। বমি করতে পারে এমনটা ভেবে রোববার বিকেলে লঞ্চে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’
“সন্ধ্যায় মা-মেয়ে নতুন কাপড় কিনে বাসায় আসে। রাত ৮টার দিকে আমার বোন ছোট ভাগ্নিকে মাদ্রাসা থেকে আনতে বাসা থেকে বেরিয়ে পড়েন। পরে ফাঁকা বাসার নিজের কক্ষে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয় আমার ভাগ্নি। বাসায় ফিরে দরজা বন্ধ দেখে ডাকাডাকি করতে থাকে আমার বোন। দরজা না খুললে প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় দরজা ভেঙে আমার ভাগ্নিকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।”
জানতে চাইলে আদাবর থানার ওসি এসএম জাকারিয়া বলেন, “মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। মরদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে রয়েছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় ১৯ জুলাই রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন নিহত তরুণীর বাবা। ১০ দিন পর ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। তাকে পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।
১৮ মার্চ বাবার কবর জিয়ারত শেষে নানা বাড়ি ফেরার পথে ওই কিশোরীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে পাশের একটি বাগানে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। এ সময় মেয়েটির ছবি তুলে রাখে অভিযুক্তরা।
ঘটনাটি কাউকে জানালে ওই তরুণীর ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি নেওয়া হয়।
ঘটনার দুই দিন পর ২০ মার্চ দুজনকে আসামি করে ভুক্তভোগী তরুণী থানায় মামলা করেন। আসামিদের একজন জনতা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র শাকিব মুন্সি এবং অন্যজন স্থানীয় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র।
আলোচিত ওই ধর্ষণের ঘটনার বিচার দাবি করে আন্দোলনের নেতারা বিভিন্ন সময় বিবৃতিও দিয়েছেন।
,