এখনও আ.লীগ ঘরানার লোকজনকে রক্ষা করা হচ্ছে: ফরহাদ মজহার

বগুড়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ মে ২০২৫, ১৮:৪৪

‘গণঅভ্যুত্থান হলেও তা এখনও পূর্ণ বিজয় অর্জন করতে পারেনি’ বলে মন্তব্য করেছেন কবি, প্রাবন্ধিক ও চিন্তক ফরহাদ মজহার। ক্ষমতার পরিবর্তন হলেও এখনও আওয়ামী লীগ ঘরানার লোকজনকে রক্ষা করা হচ্ছে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি।
শুক্রবার বগুড়া প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে এসব কথা বলা হয়।
ফরহাদ মজহার বলেন, “বিপ্লব শুরু হলেও সাংবিধানিক বাধা ও আইনের জটিলতায় তা থেমে গেছে। তাই নতুন করে রাষ্ট্র গঠনের প্রয়োজন আছে।”
এই রাষ্ট্রে জনগণের অধিকার থাকবে এবং কোনো ‘সংখ্যালঘু’ থাকবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এখনও আওয়ামী লীগের ‘ফ্যাসিস্ট ঘরানার’ লোকজন রয়ে গেছে বলে মন্তব্য করে এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, “তাদের রক্ষা করা হচ্ছে।”
যারা এই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছেন, যারা জীবন দিয়েছেন তারা রাষ্ট্রব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন চেয়েছিলেন বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “সেটি বুঝতে হবে।”
জনগণকে রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে বলে মত দিয়ে এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, “প্রতিটি জায়গায় সংস্কার আনতে হবে। তাহলেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব।”
বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও আগের সরকারের কেউই গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি বলে অভিযোগ করে মতবিনিময়ে বলা হয়,‘সঠিক গণতন্ত্র’ ফেরাতে হলে নতুন করে গণপরিষদ গঠন করে সংবিধান সংশোধন করতে হবে।
তিনি বলেন, “যেসব রাজনৈতিক দল নির্বাচনের কথা বলছে, তারাও আসলে ৭২-এর সংবিধানেই ফিরে যেতে চায়। অথচ দরকার ছিল সংলাপের মাধ্যমে একটি নতুন গঠন প্রক্রিয়া।”
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের প্রণয়ন করা সংবিধানে জনগণের চিন্তা-চেতনার প্রভাব ছিল না বলেও দাবি করেন তিনি। বলেন, “১৯৭২ সালের সংবিধান আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটি জনগণের মতামত ছাড়া তৈরি হয়েছিল।”
“ড. কামাল হোসেন সংবিধানে নিজের মতো করে গণতন্ত্রের সংজ্ঞা দিয়েছেন, কিন্তু জনগণের সঙ্গে কোনো আলোচনা করেননি। জনগণের ভাষা না বুঝে সংবিধান লেখা যায় না।”
অন্তর্বর্তী সরকার ও উপদেষ্টারা আওয়ামী লীগের ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের তৈরি সংবিধানের ভিত্তিতে’ শপথ নিয়েছেন বলে মন্তব্য করে ফরহাদ মজহার বলেন, “অথচ প্রথমে জনগণের সঙ্গে বসে বুঝতে হতো, তারা আসলে কী চায়। তাহলে বোঝা যেত, এই আন্দোলন কীসের জন্য।”