নারী সাংবাদিককে বের করে দিলেন ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৫, ১৮:৫১

অনুষ্ঠান থেকে বের করে দেওয়া সেই নারী সাংবাদিক মনিকা। ছবি: সাম্প্রতিক দেশকাল
বরিশালে মেয়র ঘোষণার দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমের সংবাদ সম্মেলন থেকে এক নারী সাংবাদিককে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দলটির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বরিশাল প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এই ঘটনা ঘটে।
ঘটনার শিকার নারী সাংবাদিক মনিকা চৌধুরী এই অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারও দাবি করেছেন তিনি।
২০২৩ সালের ১২ জুনের বরিশাল সিটি নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে নিজেকে মেয়র ঘোষণার দাবি জানিয়ে নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে করা মামলাগ্রহণের দাবি জানিয়ে বেলা ১১টায় বরিশাল প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
মহানগর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ব্যানারে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন- দলটির সিনিয়র নায়েবে আমির ও বাদী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম।
ঘটনার শিকার নারী সাংবাদিক মনিকা চৌধুরী বলেন, “ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সাংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে অফিস অ্যাসাইনমেন্ট ছিল। এ কারণে নির্দিষ্ট সময়ে প্রেসক্লাব হলরুমে প্রবেশ করে সংবাদ সম্মেলনের কিছু ফুটেজ নিচ্ছিলাম। তখন ইসলামী আন্দোলনের কয়েকজন নেতাকর্মী আমাকে সংবাদ সম্মেলন থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।”
তিনি বলেন, “আমি তাদের কাছে কারণ জানতে চাইলে তারা আমাকে বলেন- আমাদের সংবাদ সম্মেলনে নারী সাংবাদিকের প্রয়োজন নেই। আপনি এখান থেকে চলে যান। একপর্যায়ে তারা আমাকে সংবাদ সম্মেলন থেকে বের হয়ে যেতে বাধ্য করেন।”
মনিকার অভিযোগ, “শুধু প্রেসক্লাবের সংবাদ সম্মেলন থেকেই নয়, আগেও বিভিন্ন স্থানে তাদের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের কাছে নাজেহাল হতে হয়েছে। নারী বিধায় ওইসব কর্মসূচিতে অংশ নিতেও বাধা দেওয়া হয়েছে। জাতির কাছে প্রশ্ন রেখে মনিকা বলেন, নারী বলে আমার কর্মক্ষেত্রে এতো বাধা আসবে কেন? আমি এর সুষ্ঠু জবাব এবং বিচার চাই।”
নারী সাংবাদিককে সংবাদ সম্মেলন থেকে বের করে দেওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেন, “ঘটনাটি আমার সামনে ঘটেনি। এটি আমাদের কর্মীরা করতে পারে।” বিষয়টি নিয়ে আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
তবে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন সাংবাদিক সমাজ। বরিশাল প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম ফরিদ এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত নিন্দনীয়। কেননা মুসলিম নারীরাও ধর্মের জন্য অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছে। মুসলিম দেশ সৌদি আরবেও নারী সাংবাদিক রয়েছে। একজন নারী তার পেশাগত দায়িত্ব পালন করবে, এখানে তাকে কেন বাধা দেওয়া হবে। তাদের (ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ) উচিত এই ভ্রান্ত ধারণা থেকে বেরিয়ে আসা।”তারা সংযত না হলে রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলেও মন্তব্য করেন এই সাংবাদিক নেতা।