টানা কয়েক দিন ধরে চুয়াডাঙ্গায় তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এক দিনের ব্যবধানে দেশের পশ্চিমাঞ্চলের এই জেলায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙেছে।

শনিবার বিকাল তিনটায় চুয়াডাঙ্গায় ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ। গতকাল একই জেলায় সর্বোচ্চ ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, শুক্রবারের চেয়ে আজ তাপপ্রবাহ দেশের আরও বেশি এলাকায় ছড়িয়েছে। এই অবস্থা আরও অন্তত দুই দিন থাকতে পারে। বৃষ্টি ছাড়া তাপপ্রবাহ কমার কোনো লক্ষণ নেই।

সাধারণত এপ্রিল মাসে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি গরম থাকে। এই মাসে গড় তাপমাত্রা থাকে ৩৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আর মে মাস দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উষ্ণ মাস। এই মাসে গড় তাপমাত্রা থাকে ৩২ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত ২৮ মার্চ চুয়াডাঙ্গায় এবং ২৩ এপ্রিল যশোরে ৩৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। যা ছিল চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। গতকাল তা ভেঙে চুয়াডাঙ্গায় ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল। এক দিনের ব্যবধানে আজ সেই রেকর্ড ভাঙল।

তীব্র দাবদাহের কারণে চুয়াডাঙ্গায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। যারাই বেরোচ্ছেন তাদের বেশিরভাগ ছাতা সঙ্গে নিচ্ছেন।

গরমে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষেরা। তাপপ্রবাহ থেকে রক্ষা পেতে তারা মাথায় ক্যাপ অথবা গামছা পরে চলাচল করছেন। রিকশা চালক ও শ্রমজীবী মানুষকে কিছু সময় পরপরই ক্লান্ত দেহ নিয়ে ছায়ায় বিশ্রাম নিতে দেখা গেছে।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক আলতাব হোসেন বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে জেলার ওপর দিয়ে মাঝারী থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে তা অতি তীব্র তাপপ্রবাহে রূপ নিয়েছে। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা নেই।

আলতাব হোসেন জানান, সূর্যের তীব্রতা এত বেশি যে গরম আরও বেশি অনুভূত হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. হাদী জিয়া উদ্দিন আহমেদ বলেন, “তাপদাহে প্রয়োজনে বাইরে বের হলে ছাতা ব্যবহার করতে হবে। প্রতি এক ঘণ্টা পর পর বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। গরমে হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি রয়েছে। অসুস্থ হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।”