তাড়াশে সরকারি বরাদ্দের গরু বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১ মে ২০২৫, ১৬:৫৭

তালিকাভুক্ত থাকলেও অনেক পরিবার গরু না পেয়ে বঞ্চিত হয়েছেন। ছবি: সাম্প্রতিক দেশকাল
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মাঝে সরকারি গরু বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তালিকায় নাম থাকলেও অনেক ভুক্তভোগী গরু না পেয়ে বঞ্চিত হয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর মিললেও মোবাইল নম্বর ছিল অন্যজনের, ফলে প্রকৃত ব্যক্তি গরু পাননি।
এ ঘটনায় উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর এবং স্থানীয় বিএনপি নেতাদের যোগসাজশের অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা। বিতরণ কার্যক্রমে অনিয়ম প্রকাশ্যে আসায় বিব্রত হয়েছেন বিএনপি নেতারাও। এদিকে বিতরণ করা গরু ‘ওজনে কম’ হওয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। বিতরণ কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রয়েছে।
গত ৩০ এপ্রিল উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের উদ্যোগে এবং সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থায়নে ৯০ জনের মধ্যে বকনা বাছুর বিতরণ করা হয়। কিন্তু তালিকায় নাম থাকলেও কয়েকজন গরু না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বিতরণস্থলে হট্টগোলের মুখে একজনকে গরু দেওয়া হলেও বাকি কয়েকজন এখনও গরু পাননি।
ক্ষিরপোতা গ্রামের বাসুদেব সরকারের স্ত্রী সবিতা রানী বলেন, “তালিকায় আমার এনআইডি নম্বর ঠিক থাকলেও নাম লেখা হয়েছে সনজিতা রানী। স্বামীর জায়গায় দেওয়া হয়েছে দেবাশিষ সরকার। মোবাইল নম্বরটাও আমাদের নয়।”
তিনি লিখিত অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান।
তালম ইউনিয়নের মানিক চাপড় গ্রামের বাসিন্দা ক্ষিতীশ তির্কী বলেন, “তালিকায় আমার নাম থাকলেও আমাকে গরু দেওয়া হয়নি। শুনেছি, কেউ একজন আমার নামেই গরু নিয়ে গেছে।”
জেলা বিএনপির উপদেষ্টা খোন্দকার সেলিম জাহাঙ্গীর বলেন, “দলীয় পরিচয়ে কেউ অনিয়ম করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য আমরা হাইকমান্ডের কাছে দাবি জানাচ্ছি।”
তাড়াশ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, “তালিকা স্থানীয় বিএনপি নেতারা দিয়েছেন, আমরা সেই অনুযায়ী গরু দিয়েছি। তালিকাভুক্ত দুইজন গরু না পাওয়ার অভিযোগ পেয়েছি। দায় সংশ্লিষ্টদেরই নিতে হবে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম বলেন, “এটা খুবই দুঃখজনক। কারা প্রকৃত ভুক্তভোগীর গরু নিয়েছে, তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”