কলেজের অর্থ আত্মসাৎ করে লন্ডনে পাড়ি জমালেন শিক্ষক দম্পতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১ মে ২০২৫, ১৮:৪৯

শিক্ষক দম্পতি। ছবি: সাম্প্রতিক দেশকাল
বরিশাল সিটি কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুজিত কুমার দেবনাথ ও তার স্ত্রী রীনা রানী সুতার টাকার বেশি অর্আ আত্মসাৎ করে পরিবারসহ লন্ডনে পালিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
তারা শুধু অর্থ নয়, কলেজের জমির দলিল, হিসাবপত্রসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রও নিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
সাম্প্রতি এক অডিট রিপোর্টে উঠে আসে সুজিত কুমার গত ৯ বছরে কলেজ থেকে আত্মসাৎ করেছেন মোট ৬৫ লাখ ৫৩ হাজার ১৩৭ টাকা।
কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায়, অর্থ আত্মসাৎ ছাড়াও তিনি বিভিন্ন পদে চাকরি দেওয়ার নাম করে আরও অর্ধ কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছেন।
সিটি কলেজের শিক্ষকরা জানায়, সুজিত কুমার নিজেকে সাবেক আওয়ামী লীগ সাংসদ পংকজ নাথের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে প্রভাব খাটাতেন। ক্ষমতার জোরে তিনি ২০১৫ সালে জ্যেষ্ঠতা উপেক্ষা করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব নেন। এরপর দীর্ঘ আট বছর ধরে অনিয়ম আর দুর্নীতির মাধ্যমে কলেজের আর্থিক লুটপাট চালান।
২০২৩ সালের নভেম্বরে তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এরপরও তিনি অনিয়মিতভাবে অফিস করতেন। ২০২৫ সালের ৬ এপ্রিল তিনি অবসর নেন।
অডিট কমিটির আহ্বায়ক মুহাম্মদ মুয়াজ্জেম হোসাইন বলেন, “২০১৫ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সুজিত কুমার ৬৫ লাখের বেশি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়াও তিনি কলেজের গুরুত্বপূর্ণ দলিলপত্রসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আত্মসাৎ করেছেন।”
তার স্ত্রী রীনা রানী সুতার বরিশালের শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক। দীর্ঘদিন কলেজে অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিত বেতন তুলেছেন।
সাবেক সংসদ সদস্য আবুল হাসনাত আবদুল্লাহর আত্মীয়ের সুপারিশে তিনি নিয়োগ পান।
আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুস সালাম ব্যাপারী বলেন, “কলেজে অনুপস্থিত থাকায় শিক্ষক রীনা রানী সুতারকে দুই দফা নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আরও একটি নোটিশ পাঠানো হবে। সাড়া না পেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠি দেওয়া হবে।”
সিটি কলেজের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান বলেন, “সুজিত কুমার দায়িত্বে থাকাকালীন কলেজটিকে দুর্নীতির কেন্দ্রে পরিণত করেছিলেন। অনেকের কাছ থেকে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছেন। তিনি কারণ দর্শানোর নোটিশেরও কোনো জবাব দেননি। তাই গভর্নিং বডির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।”