
হঠাৎ মৃদু হাওয়া, মেঘেদের ঘর্ষণে চারদিকে নেমে আসে অন্ধকার। বিদ্যুতের আলোর ঝলকানি আর মেঘেদের ঘর্ষণে প্রকৃতি হয়ে পরে বেসামাল।
ঘূর্ণিঝড় আমফানের তাণ্ডবে বুধবার মধ্য রাত থেকে ভোর পর্যন্ত ঝড়ে নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলায় অন্তত ১০-১৫ শতাংশ গাছের আম, লিচু মাটিতে ঝরে পরে। কোথাও কোথাও এক হাঁটু জলে ডুবে যায় মাঠ ভরা ধান।
বাজারের ছোট ছোট দোকান ঘড়গুলোর টিন উড়ে যায়। এ সময় রাস্তার আসে পাশে ছোট বড় অনেক গাছ ডালপালা ভেঙ্গে উপরে পরে থাকতে দেখা গেছে। ঝড়ের তাণ্ডবে বিদ্যুতের তার ছিরে যাওয়ায় পুরো উপজেলায় বিরাজ করে একরকম ভূতুরে অন্ধকার।
শুক্রবার (২২ মে) এমন তথ্য জানিয়ে সাম্প্রতিক দেশকাল প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেন ধামইরহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সেলিম রেজা।
এদিকে গাছের আম ঝরে পড়ায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে আম, লিচু চাষি ও ব্যবসায়ীদের। তারা বলছেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে লকডাউনে দাম নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় ছিলাম তার উপর আমফানের তাণ্ডবে আম, লিচু ব্যাপক হারে ঝরে পড়ায় সর্বস্বান্ত হয়ে গেলাম। এখন লাভ তো দুরের কথা পরিশ্রমের টাকায় তো উঠবে না।
শিবলী সরকার বলেন, আমি প্রায় ৬য় বিঘা জমিতে আম ও লিচুর বাগান করি। এবার ফলনও ভালো হয়েছিল কিন্তু আমফানের তাণ্ডবে বাগানের আম লিচু সব ঝড়ে পরে গেলো। কি যে করি কিছুই বুঝে উঠতে পারছিনা।
কৃষক অব্দুল হাই দুলাল বলেন, কাজের লোক সংকটের কারণে ধান কাটতে পারিনি। শনিবার ধান কাটার চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়েছিলাম কিন্তু ঘূর্ণিঝড় আমফানের তাণ্ডবে মাঠের ধান পানিতে ডুবে যাওয়ায় সব স্বপ্ন নিমিষেই শেষ হয়ে গেলো। একদিকে দালাল আর সিন্ডিকেটের কারণে কৃষকরা ন্যায্যমূল্যে ফসল বিক্রি করতে না পারায় ধান নিয়ে লোকসান গুনতে হচ্ছে অন্যদিকে প্রাকৃতিক বিপর্যয়।
এ বিষয়ে কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সেলিম রেজা বলেন, উপজেলায় উৎপাদিত ১৬ হাজার ৩০ হেক্টরের মধ্যে ১১ হাজার ৬০০ হেক্টর ধান ইতিমধ্যে কাটা হয়ে গেছে। বাকি বেশির ভাগ ধান আছে উপজেলার অগ্রাদ্বিগুন ও খেলনা উপজেলায়। সেখানকার ধানগুলো কাঁচা থাকায় ঝড়ে ক্ষতি হয়নি তবে পৌরসভার আশেপাশে কিছু পাকাধান ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এবার লিচু থেকে আমের ফলন ভালো হয়েছে। উৎপাদিত ৬ শত ৭০ হেক্টর আমের মধ্যে ক্ষতি হয়েছে ৬-৭ ভাগ আম ঝড়ে পরে গেছে। ঝড়ে পরা লিচুর পরিমাণ প্রায় ৪-৫ ভাগ। আর ১৫ হেক্টর সবজি যেমন করলা, পোটলের মাচা ভেঙ্গে অনেকটা ক্ষতি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আমফানের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করে বিভিন্ন প্রণোদনার মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।