পাবনায় বিপৎসীমার ওপরে পদ্মার পানি, প্লাবিত নিম্নাঞ্চল

প্রতিনিধি, পাবনা
প্রকাশ: ০২ অক্টোবর ২০১৯, ১৮:২৩

পাবনার পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মার পানি বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ঈশ্বরদী উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের বেশকিছু গ্রামের নিম্নাঞ্চলের মানুষ।
আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে পানি পরিমাপের পর পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম জানান, উজানে অতিবৃষ্টি এবং ভারতের বেশ কিছু অঞ্চলে বন্যার কারণে গঙ্গা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে পানি বাড়লেও ভয়াবহ বন্যার কোনো ধরনের আশঙ্কা নেই। কিছুদিনের মধ্যে পানি নেমে যাবে। জলবায়ু পরিবর্তন ও উজানে প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে এই পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি বলেন, গত চব্বিশ ঘণ্টায় পাবনা অঞ্চলে পদ্মার পানি ছয় সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে পদ্মার পানি ১৪ দশমিক ২৮ সে.মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পাবনা জেলার ১৫৮ কিলোমিটার দীর্ঘ যে শহর রক্ষা বাধ রয়েছে তা সম্পূর্ণ ঝুঁকিমুক্ত রয়েছে।
এদিকে, পদ্মায় পানি বাড়ার কারণে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ঈশ্বরদী উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের বেশকিছু গ্রামের নিম্নাঞ্চলের মানুষ। ডুবে গেছে শীতকালীন সবজিসহ বিভিন্ন ফসল। অনেকে বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন উঁচু এলাকার স্বজনদের বাড়িতে। তবে এখন পর্যন্ত প্রশাসনের কেউ যোগাযোগ করেনি বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
পাবনা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, পাবনায় পদ্মার পানি বৃদ্ধির কারণে প্রায় এক হাজার ৭০০ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে শীতের আগাম বিভিন্ন ধরনের সবজির।
সরকারিভাবে আগাম বার্তা না পাওয়ার কারণে বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করছেন সাধারণ কৃষকেরা। তবে এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকারি সহযোগিতা না পেলে না খেয়ে থাকতে হবে বলে জানান তারা।
পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আজহার আলী বলেন, পাবনা জেলায় এবার আকস্মিক বন্যায় প্রায় ৭ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ এক হাজার ৭৩০ হেক্টর।
তিনি বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সরকারিভাবে যেকোনো ধরনের সহযোগিতা আসলে তা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অবশ্যই দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১৬ বছর পর পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করল। সর্বশেষ ২০০৩ সালে এই পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছিল।