বাবার সাথে তাঁতের কাজ করেও জিপিএ ৫ পেলো রানা

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ জুন ২০২০, ১৫:০৩

লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার সিঙ্গিমারী ইউনিয়নের উওর ধুবনী গ্রামের তাঁতী ঠান্ডু মিয়ার পুত্র সোহেল রানা এসএসসি পরীক্ষায় সব বিষয়ে এ প্লাস পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। তিনি পিইসি, জেএসসি পরীক্ষাতেও এ প্লাস পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন।
বাবার সাথে তাঁতের কাজ করে গোল্ডেন এ প্লাস পাওয়া সোহেল রানা লেখাপড়া করে ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। কিন্তু তার সেই স্বপ্নে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দারিদ্র্য। এবার উপজেলার এসএস সরকারী হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছে।
স্থানীয়সূত্রে জানা যায়, এক সময় তাঁত শিল্পের বেশ কদর থাকলেও আধুনিক বিশ্বে তাঁত শিল্প ধ্বংসের পথে। এ পেশার মানুষজন পেশা পরিবর্তন করে অন্য পেশায় চলে গেলেও সোহেল রানার বাবা ঠান্ডু মিয়া এখনো তাঁত শিল্পকে নিয়েই বেঁচে আছেন। সংসারে অভাব অনটনের কারণে তার এক ছেলে ও এক মেয়েকে লেখাপড়া করা সম্ভব হয়নি। ওই ছেলে ও মেয়ে বর্তমানে ঢাকায় পোশাক শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। মাঝে মধ্যে তার স্ত্রীও ঢাকায় গিয়ে বিভিন্ন কাজ করেন।
ওই পরিবারের ৩য় সন্তান সোহেল রানা লেখাপড়ায় বেশ পারদর্শী হওয়ায় তাকে লেখাপড়া করানোর স্বপ্ন দেখেন পরিবারের অন্য সদস্যরা। অভাব আর অনটনের মাঝেই শুরু হয় সোহেল রানার লেখাপড়া। সোহেল রানা লেখাপড়ার পাশাপাশি তার বাবাকে তাঁতের কাজে সহযোগিতাও করেন। সেই সোহেল এবারে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে ভোকেশনাল শাখা থেকে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছে। এখন স্বপ্ন দেখছেন উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার।
সোহেল রানা বলেন, পিইসি, জেএসসি ও এসএসসিতে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছি। এইচএসসিতেও গোল্ডেন এ প্লাস পেতে চাই। কিন্তু আমার বাবার পক্ষে লেখাপড়ার খরচ জোগাড় করা সম্ভব নয়। তাহলে দরিদ্রতার কাছে আমি কি হেরে যাবো? গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে লাভ কি? কলেজে ভর্তি হতে পারবো কি?
হাতীবান্ধা এসএস সরকারী হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম প্রধান জুয়েল বলেন, সোহেল রানা একজন মেধাবী ও ভদ্র শিক্ষার্থী। তার পরিবারে আর্থিক সংকট রয়েছে। যদি কেউ সোহেল রানাকে সহযোগিতা করেন তাহলে সে একদিন দেশের সম্পদ হয়ে ওঠবে।