Logo
×

Follow Us

জেলার খবর

বরিশালে নকল ওষুধ তৈরির কারখানার সন্ধান

Icon

বরিশাল প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৫ জুন ২০২০, ১৯:১৯

বরিশালে নকল ওষুধ তৈরির কারখানার সন্ধান

ছবি: বরিশাল প্রতিনিধি

বরিশাল নগরীতে নকল ওষুধ ও ভারতীয় প্রসাধনী তৈরির কারখানা খুঁজে পেয়েছে জেলা ও পুলিশ প্রশাসন। অভিযান চালিয়ে ওই কারখানা থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের নকল ওষুধ ও প্রসাধনী এবং এসব তৈরির মেশিনসহ বিভিন্ন সামগ্রী জব্দ করেছেন তারা।

এই ঘটনায় অবৈধভাবে বিভিন্ন কোম্পানির নাম ব্যবহার করে নকল ওষুধ ও প্রসাধনী তৈরি এবং বাজারজাতের অপরাধে আটককৃত দুইজনকে এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড সাথে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি কারখানাটি সিলগালা করে দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

সোমবার (১৫ জুন) দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে নগরীর ২৩ নম্বর ওয়ার্ডস্থ সাগরদী এলাকায় এই মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালিত হয়।

দণ্ডিত অসাধু ব্যবসায়ীরা হলেন- নকল ওষুধ ও প্রসাধনী প্রস্তুত এবং বিক্রির মূল হোতা বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা মাসুম বিল্লাহ (২৭) ও তার সহযোগী একই এলাকার বাসিন্দা নূরে আলম (২৩)।


এরা নগরীর ২৩ নম্বর ওয়ার্ডস্থ দক্ষিণ সাগরদী টিয়াখালী সড়কের ডাক্তারবাদী সংলগ্ন হদুয়া দরবার শরীফের পীর মাও: ছাদেক আহমদ এর নাম সম্বলিত হদুয়া মঞ্জিল-২ নামক একটি বাড়িতে মেশিনের সাহায্যে নকল ওষুধ তৈরি এবং বাজারজার সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছিল।

বরিশাল নগরীর প্রতিষ্ঠিত ওষুধ কোম্পানি কেমিস্ট ল্যাবরেটরিস লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার কালজ ঘোষ জানান, আমরা খবর পাই একটি চক্র নগরীর নদী বন্দর থেকে আমাদের কোম্পানির লোগোযুক্ত কাগজের প্যাকেট (কার্টুন) সংগ্রহ করা হয়েছে। কিন্তু এ ধরনের কার্টুনের কোন অর্ডার আমাদের কোম্পানির না থাকায় বিষয়টি নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়।

তিনি বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি প্রশাসনকে জানালে তাদের সহযোগিতায় নদী বন্দর এলাকা থেকে সোমবার দুপুরে মো. মাসুম বিল্লাহ ও নূরে আলম নামের দুই ব্যক্তিকে ওই কার্টুনসহ আটক করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে ড্রাগ সুপার কার্যালয় ও পুলিশ টিয়াখালী সড়কের ওই বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করেন।

অভিযানে সহযোগিতা করা ওষুধ প্রশাসন বরিশাল কার্যালয়ের তত্ত্বাবধায়ক অদিতি স্বর্ণা বলেন, দেশিয় এসিআই, কেমিস্ট, জেসন, গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেডসহ বিভিন্ন কোম্পানির নাম ব্যবহার করে প্রস্তুতকৃত নকল ওষুধ ও প্রস্তুত কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সামগ্রী এই অবৈধ কারখানায় খুঁজে পাওয়া গেছে। পাশাপাশি ভারতীয় গোদরেজ, গুরুদেব, ডাবর আমলা নামক প্রসাধনীও পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে যতটুকু তথ্য জানা গেছে তাতে তারা এসব কোম্পানির পণ্য এখানে বসেই তৈরি করতো এবং পরবর্তীতে তা পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করে আসছিল। যা আইনত দণ্ডনিয় অপরাধ।


মোবাইল কোর্ট অভিযানের নেতৃত্ব দেয়া বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউর রহমান জানান, টিনশেডের ওই ঘরটি তালাবদ্ধ ছিলো। তালা ভেঙে আমাদের ওই ঘরটিতে প্রবেশ করতে হয়েছে। পরে তল্লাশি চালিয়ে ঘর থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের বিভিন্ন কোম্পানির নকল ওষুধ জব্দ করা হয়েছে। যার মধ্যে কিছু প্রসাধনীও রয়েছে। সেই সাথে নকল ওষুধ উৎপাদন, প্যাকেজিং ও বাজারজাতের বিভিন্ন সামগ্রী জব্দ করা হয়।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউর রহমান বলেন, ঘটনার সাথে জড়িত ও আটক হওয়া দুইজনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তাদেরকে প্রত্যেকটি এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং আড়াই লাখ টাকা করে মোট ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সিলগালা করে দেয়া হয়েছে নকল সুধু প্রস্তুতকারী ওই কারখানাটি। এ ভেজাল কাজের সাথে জড়িত অন্যদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫