স্বাস্থ্যবিধি না মানায় বাড়ছে করোনা রোগী

চঞ্চল সর্দার, রাজবাড়ী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২০, ১৮:৫৬
করোনাভাইরাস সংক্রামণ রোধে সামাজিক দূরত্ব ও মাস্ক ব্যবহারের ওপর সরকারের কঠোর নির্দেশনা থাকলেও তা মানছে না এই জেলার বেশির ভাগ মানুষ। তাই প্রতিদিনই প্রায় এই জেলায় করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে।
প্রশাসন প্রথম দিকে করোনা নিয়ে সতর্ক থাকলেও বর্তমানে তাদের কার্যক্রম কম বলে জানিয়েছে সাধারণ মানুষ। যারা স্বাস্থ্যবিধি মানছে না সচেতন মহলের দাবি প্রশাসন যেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে ।
সম্প্রতি সরোজমিনে বাজারগুলোতে গিয়ে দেখা যায় ক্রেতাদের মধ্যে সামজিক দূরত্ব বজায় রাখার কোনো বালাই নাই। তারা গাদাগাদি করে দোকানগুলোতে ভিড় করছে। চায়ের দোকান ও সড়কগুলোতে দেখা যায় করোনার মধ্যেও চলছে মানুষের আড্ডা । তাদের চোখ মুখে নাই করোনার ভয়।
এদিকে করোনার কারণে ছোট ছোট যানবাহনে যাত্রীদের চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু তারা মানছে না স্বাস্থ্যবিধি। অটো গাড়িতে দেখা যায় চালকরা ৮ জন যাত্রী পরিবহণ করছে। ভ্যানে চারজন, হুন্ডায় তিনজন ও রিক্সাতে দু’জনসহ অন্যান্য গাড়িতে যে সামাজিক দূরুত্ব বজায় রাখার কথা সেটা চালক ও যাত্রীরা মানছে না। এতে করে করোনা সংক্রামণের ঝুঁকি বাড়ছে।
রাজবাড়ীর সিভিল সাজর্ন ডা: মো: নুরুল ইসলাম বলেন,করোনা একটি মারাত্মক সংক্রামক ব্যাধি। এটা থেকে বাঁচতে হলে আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মানতেই হবে। বিনা কারণে আমাদের ঘরের বাইরে যাওয়া যাবে না। বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দিতে হবে। একটু পর পর আমাদের হাত ধুতে হবে ২০ সেকেন্ড করে। অযথা নাকে, মুখে বা চোখে হাত দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
তিনি বলেন, বাইরে গেলেও সামাজিক দূরত্ব ৩ ফুট মেনে আমাদের চলতে হবে। মানুষের কাছাকাছি আসা যাবে না দূরত্ব বজায় রেখে আমাদের কাজটি করতে হবে। এই দিকে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। সবচেয়ে বেশি যেটা আমাদের প্রয়োজন সেটা সচেতনতা। লোকজন যদি সচেতন না হয় তাহলে স্বাস্থ্যবিধি বাস্তবায়ন করা সম্ভব না। আগে আমাদের সচেতন হতে হবে। আশপাশের লোকদেরকে সচেতন করতে হবে। তাহলেই স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত হবে।
রাজবাড়ী সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: সাঈদুজ্জামান খান বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য আমরা বিভিন্ন চেয়াম্যানদের মাধ্যমে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ইউনিয়ন কমিটি ও ওয়ার্ড কমিটিতে যারা আছেন তারা সচেতনতামূলক মিটিং করছে।
তিনি বলেন, পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে কাজ করার জন্য। পুলিশও তাদের মতো করে চেষ্টা করছে। সব জায়গায় কমবেশি মোবাইল কোর্টও পরিচালনা করা হচ্ছে।
সচেতনতাকে গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের যেটা করতে হবে সেটা হলো নিজেদের সচেতন থাকতে হবে। কারণ জেলায় হাজার হাজার মানুষ বাস করে। প্রত্যেককে তো ধরে ধরে স্বাস্থ্যবিধি বাস্তবায়ন করা কঠিন। নিজেদের সচেতনতা নিজেদের তৈরি করতে হবে।
উলেখ্য, এ পর্যন্ত রাজবাড়ীতে ৩৮৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরেছেন ৯৫ জন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। অন্যরা হাসপাতালের আইসোলেশনে ও হোম আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।