জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের গুদাম থেকে সাড়ে ২৭ মেট্টিক টন সরকারি চাল জব্দ করেছে প্রশাসন। এ ঘটনায় উপজেলা প্রশাসন অবৈধ গুদাম ঘরটি সিলগালা করে দিয়েছে। 

গতকাল সোমবার (১৭ আগস্ট) গভীর রাতে ইসলামপুর পৌরসভার দক্ষিণ দরিয়াবাদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

জব্দকৃত চালগুলো উপজেলার গোয়ালের চর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুন অর রশীদের নামে বরাদ্দকৃত জিআর ও ভিজিডি প্রকল্পের আওতাভুক্ত বলে জানা গেছে। এদিকে মেসার্স মীম এন্টারপ্রাইজ নামের গুদামঘরটি ইউপি চেয়ারম্যানকে ভাড়া দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার গভীর রাতে ইসলামপুর পৌরসভার দক্ষিণ দরিয়াবাদ এলাকায় অবস্থিত আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলমের মালিকানাধীন মেসার্স মীম এন্টারপ্রাইজ নামের গুদামে অভিযান চালান উপজেলা প্রশাসন নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। 

এ সময়  গোয়ালের চর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ হারুন অর রশীদের নামে বরাদ্দকৃত ৩২২ বস্তায় ৯ হাজার ৬৬০ কেজি (৯ মে. টন ৬৬০ কেজি) ভিজিডির চাল এবং বন্যার্তদের জন্য সরকারি ত্রাণের ৬০০ বস্তায় ১৮ হাজার কেজি (১৮ মে. টন) জিআর চাল জব্দ করা হয়। সবগুলো মিলিয়ে মোট চালের পরিমাণ ছিল ২৭ মেট্রিক টন ৬৬০ কেজি।

চালগুলো প্রশাসনের জব্দ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে ওই অবৈধ গুদামঘরটি তাৎক্ষণিক সিলগালা করে দেওয়া হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ‘চাল উদ্ধারের ঘটনায় পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে সাময়িক বহিষ্কারসহ ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গোয়ালের চর ইউপির চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ হারুন বলেন, ‘ইউনিয়নের স্থায়ী ভবন না থাকায় দীর্ঘদিন থেকে মেসার্স মীম এন্টারপ্রাইজ নামের গুদামঘরটি ভাড়া নিয়ে ভিজিএফ, ভিজিডি ও জিআর চাল রাখা হয়। এখান থেকেই এসব বিতরণ করা হয়।’

মেসার্স মীম এন্টারপ্রাইজ নামের গুদামঘরের মালিক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘গোয়ালের চর ইউপি চেয়ারম্যান চার বছর ধরে গুদামটি ভাড়া নিয়ে সরকারি চালসহ অন্যান্য মালামাল উত্তোলন করে রাখেন। পরে এখান থেকে নিয়ে বিতরণ করা হয়।’

এ চালের সাথে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলেও তিনি দাবি করেন। তবে ওই গুদাম ঘরে সরকারি চাল রাখা অবৈধ বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।