বরিশালে ৮ নারী ধর্ষণ, অভিযুক্ত হীরা কারাগারে

বরিশাল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২০, ২২:০০

বরিশালের বাকেরগঞ্জে চার বছরে আট নারী ও শিশু ধর্ষণে অভিযুক্ত নওরোজ হীরা সিকদারসহ মামলার নামধারী দুই আসামিকে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আত্মগোপনে থাকা আসামিরা বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) বিকালে বরিশালের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বাকেরগঞ্জ আমলি আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন।
এসময় বিচারক এসএম মাহফুজ আলম তাদের আবেদন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। জেলে যাওয়া নওরোজ হীরা সিকদার বাকেরগঞ্জ উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের পশ্চিম ফরিদপুর গ্রামের মৃত আব্দুল খালেক সিকদারের ছেলে।
হীরা উপজেলার কাকরধা স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্য। অপরজন তার সহযোগী এবং ভাতিজি একই গ্রামের নুরু সিকদারের মেয়ে মারিয়া আক্তার।
এর আগে গত ২৮ অক্টোবর ধর্ষণের শিকার এক স্কুল ছাত্রীর মা বাদী হয়ে বাকেরগঞ্জ থানায় নওরোজ হীরা এবং তার ভাজিতি মারিয়ার বিরুদ্ধে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ এনে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী ২০০৩) ৯(১)৩০ ধারায় মামলা দায়ের করেন।
মামলা এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুই সন্তানের জনক নওরোজ হীরা সিকদার ঢাকায় থাকেন। তার স্ত্রী শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স। স্ত্রীর অবর্তমানে তিনি দীর্ঘ দিন গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করেন।
সম্প্রতি গ্রামের একাধিক নারী এবং তার পরিচালনাধীন স্কুলের ছাত্রীসহ আটজন নারীর সঙ্গে তার অবৈধ সম্পর্ক এবং বিশেষ মুহূর্তের কিছু ভিডিও এবং স্থির চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
ভিডিও এবং ছবি দৃষ্টিতে আসলে বরিশাল সদর উপজেলার বন্দর থানাধীন সাহেবের হাট এলাকার জনৈক ব্যক্তি বাকেরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। এর পর পরই পুলিশ ঘটনাস্থল তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পান। পরে ধর্ষণের শিকার এক স্কুল শিক্ষার্থীর মা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, তারা অর্থনৈতিকভাবে অসচ্ছল। এজন্য মেয়েকে প্রাইভেট পড়ানো সম্ভব হচ্ছিলো না। তখন মামলার আসামি মারিয়া আক্তার বিনামূল্যে প্রাইভেট পড়ানোর কথা বলে ২০১৮ সালের ২৫ অক্টোবর সকালে তার চাচা নওরোজ হিরার কাছে নিয়ে যায়। পরে হীরা তার ঘরে ওই শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ পরবর্তী তার ভিডিও এবং স্থির চিত্র ধারণ করে।
মামলায় বলা হয়েছে, ঘটনাটি পূর্বে ঘটলেও তার জানা ছিলো না। মেয়েকে হুমকি দিয়ে বিষয়টি গোপন রাখতে বলে। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও এবং ছবি প্রকাশ পেলে বিষয়টি তিনি জানতে পারেন এবং বিচারের দাবিতে মামলা করেন।
মামলায় আরও বলা হয়েছে, নওরোজ হীরা ইতিপূর্বে বহু ছাত্রী এবং গ্রামের নারীদের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করেছে। পরবর্তীতে তা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ভিডিও এবং স্থির চিত্র ধারণ করেন।
সম্প্রতি এলাকায় তার সঙ্গে স্থানীয় কিছু লোকের বিরোধ হয়। তাদের মধ্যে হাতাহাতির সময় হীরার মোবাইলটি পড়ে যায়। পরে ওই মোবাইল খুঁজে পেয়ে কোন ব্যক্তি ভিডিওগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করেন।