ম্রো সম্প্রদায়ের নিজস্ব ভাষার বর্ণমালা বিলুপ্ত হওয়ার পথে। তাই নিজস্ব ভাষা রক্ষার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন মেনপয় ম্রো নামে একজন শিক্ষিক। তিনি একজন স্বশিক্ষিত ব্যক্তি। প্রচলিত কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেননি। বাংলা বর্ণমালা তেমন জানেন না। বাংলায় লিখতে না পারলেও ভাঙা ভাঙা বাংলা বলতে পারেন। এই পুঁজি দিয়েই স্ব-উদ্যোগে ম্রো ভাষা বর্ণমালা শিক্ষার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। 

সম্প্রতি চিম্বুক পাহাড়ে ক্রামাদি পাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, তাঁকে ঘিরে রেখেছে ৩৫ জন ছোট শিশু। শিশুদের মাঝখানে বসে ম্রো মাতৃভাষার বর্ণমালা পড়াচ্ছেন। সবার বয়স ৪-১২ বছরের মধ্যে। 

শিক্ষার্থীরা জানায়, বাংলার চাইতে তাদের নিজস্ব মাতৃভাষায় পড়তে বেশি ভালো লাগে। সহজে কোনো কিছু বুঝতে পারে। তাই সুযোগ পেলে তাদের গ্রামের বাড়িতে এসে মেনপয় ম্রোর পাঠশালায় বই নিয়ে বসে পড়ে। তবে তিনি বাংলা বলতে পারেন না। অনুবাদ করে বুঝিয়ে দেন ক্রামাদি পাড়ার সিমপাত ম্রো। 

মেনপয় ম্রো বলেন, গ্রাম বা পাড়ার লোকজনের কাছ থেকে কোনো আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করি না। নিজের কিছু ফলদ বাগান থেকে যে অর্থ আসে তাই দিয়ে সংসার চালাই। শত কষ্টের মাঝেও নিজ প্রচেষ্টায় ম্রো মাতৃভাষার বর্ণমালার শিক্ষা কার্যক্রম টিকিয়ে রাখার সংগ্রাম করে যাচ্ছি। এ বিষয়ে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য সিং ইয়ং ম্রো বলেন, সম্পূর্ণ নিজেদের উদ্যোগে ম্রো মাতৃভাষার বর্ণমালা শিক্ষা কার্যক্রম কোনো মতে চলছে। এ কার্যক্রম বাঁচিয়ে রাখতে সরকারের সহযোগিতা দরকার।