রাঙামাটিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শ্রমিকের মৃত্যু, বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও

রাঙামাটি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১০:৩৭
-603092137e45d.jpg)
ছবি: রাঙামাটি প্রতিনিধি
রাঙামাটি শহরে বিদ্যুৎ বিভাগের একটি খুঁটি স্থানান্তরের কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে।
এই ঘটনায় বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী গতকাল শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার দিকে শহরের ভেদভেদী এলাকায় বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে।
তাদের অভিযোগ, বিদ্যুৎ বন্ধ রেখে কাজ করার কথা থাকলেও বিদ্যুৎ বিভাগ বিদ্যুৎ চালু রাখার কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, শুক্রবার সকালে শহরের দেবাশীষনগর এলাকায় বিদ্যুৎ বিভাগের খুঁটি স্থানান্তরের কাজে আরো অনেকের সাথে অংশ নেয় শহরের মোল্লাপাড়া এলাকার জনৈক আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে মো. বাপ্পী (২৫)। কিন্তু সঞ্চালন লাইনের সাথে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হন তিনি। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে প্রথমে রাঙামাটি সদর হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসা অবস্থা আশংকাজনক দেখে চট্টগ্রামে রেফার করেন। সেখানে নেয়ার পর শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে মৃত্যুবরণ করে সে।
পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার লাশ রাঙামাটি আনা হলে ক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল বের করে ও বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও করে। এসময় তারা নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে নানান শ্লোগান দেন এবং পূর্বঘোষণা অনুসারে- বিদ্যুৎ বিভাগ পুরো শহরে বিদ্যুৎ বন্ধ রাখার কথা থাকলেও সঞ্চালন লাইনে কেনো বিদ্যুৎ ছিলো তার কৈফিয়ত দাবি করেন। প্রায় দুই ঘণ্টা রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে অবস্থান নিয়ে সব ধরণের যান চলাচল বন্ধ করে দেন তারা। রাত সাড়ে ১১টায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরপেক্ষ তদন্ত ও দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলে ফিরে যান তারা। তবে এই ঘটনার প্রতিবাদে আজ শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকালে শহরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানিয়েছেন তারা।
রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ কান্তি মজুমদার জানিয়েছেন, দেবাশীষনগর এলাকায় আমাদের বিদ্যুৎ বিভাগের কাজ করার সময় ঠিকাদারের একজন শ্রমিক লাইফলাইন স্পর্শ করায় দুর্ঘটনায় পড়ে এবং খবর পেয়ে আমরা দ্রুত তাকে প্রথমে রাঙামাটি ও পরে চট্টগ্রামে পাঠাই। সেখানেই তিনি মৃত্যুবরণ করেছে। এটি নিছক একটি দুর্ঘটনা, এর জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের কোনো দায় নেই। তবুও বিক্ষুদ্ধদের পক্ষ থেকে আলোচনার জন্য প্রতিনিধিরা এসেছেন, আমরাও তাদের যথাসাধ্য সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছি, কিন্তু তারা কথা শুনছে না। আমাদের অফিসের সামনে অবস্থান নিয়েছে। বিষয়টি আমরা স্থানীয় প্রশাসন ও উর্ধ্বতনদের সাথে আলাপ করছি।
রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) তাপস রঞ্জন ঘোষ জানিয়েছেন, বিষয়টি আমরা জেনেছি, সেখানে পুলিশ গেছে। বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্বশীল ও প্রতিবাদকারীদের সাথে আমরা কথা বলছি। প্রকৃত ঘটনা কি সেটা জানার চেষ্টা করছি আমরা। তারপর আইনী পদক্ষেপ নেয়া হবে।