মাদক মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত পারভীনকে ১০টি বই পড়াসহ সাত শর্তে বাড়িতে কারাভোগের আদেশ দিয়েছে যশোরের একটি আদালত।
গতকাল মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) যুগ্ম দায়রা জজ দ্বিতীয় আদলতের বিচারক শিমুল কুমার বিশ্বাস এ আদেশ দিয়েছেন।
সাজাপ্রাপ্ত পারভীন শহরের আশ্রম রোডের গাড়োয়ান পট্টির মৃত ওহাব মুন্সির মেয়ে।
আদেশে প্রবেশনের কোনো শর্ত ভঙ্গ করলে তা যেকোনো সময় আদালত কৃর্তক বাতিল হবে এবং দোষী সাব্যস্ত করে অপরাধের জন্য দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ড, এক হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক মাসের সশ্রম কারাদণ্ডে কারাগারে অন্তরীণ থাকতে হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের সরকারি কৌশলী (এপিপি) আইয়ুব খান বাবুল।
পারভীনকে ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের উপর লেখা জাহানারা ইমামের ‘একাত্তরের দিনগুলি’, নীলিমা ইব্রাহিমের ‘আমি বীরঙ্গনা বলছি’, মালেকা বেগমের ‘মুক্তিযদ্ধে নারী’, মুহাম্মদ জাফর ইকবালের ‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস’, আনিসুল হকের ‘মা’, জহির রায়হানের ‘আরেক ফাগুন’, ‘একুশের গল্প’, সেলিনা হোসেনের ‘নিরন্তর ঘণ্টাধ্বনি’ ও ‘যাপিত জীবন’, শতকত ওসমানের ‘আর্তনাদ’ ও সৈয়দ শামসুল হকের ‘আরো একজন’- বইগুলো পড়তে হবে।
অন্য শর্তগুলো হলো- একইসাথে সমাজসেবা অধিদফতরের প্রবেশন অফিসারের নজরদারিতে থেকে কোনো অপরাধের সাথে জড়ানো যাবে না। সর্বত্র শান্তি বজায় রাখবেন ও সকলের সাথে সদাচারণ করবেন। আদালত অথবা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাকে কখনো তলব করলে শাস্তি ভোগ করার জন্য প্রস্তুত হয়ে যথাস্থানে হাজির হবেন। প্রকার মাদক সেবন, বহন, সংরক্ষণ এবং সেবনকারী, বহনকারী ও হেফাজতকারীর সাথে মেলামেশা বা চলাফেরা করতে পারবেন না। আদালত কর্তৃক প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে থেকে নিজের বাসস্থান ও জীবনধারণের উপায় সম্পর্কে অবহিত করবেন। এই সময়কালীন প্রবেশন অফিসারের লিখিত অনুমতি ব্যতিত নিদিষ্ট এলাকার বাইরে যেতে পারবেন না।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ২০০৬ সালের ১৫ জুন আসামি পারভীনকে আটক ও তার কাছ থেকে ২০ পুরিয়া হেরোইন উদ্ধার করা করে পুলিশ। এ মামলায় আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর দীর্ঘ ১৫ বছরের মধ্যে হাজিরা কামাই দেয়নি পারভীন। এ মামলা ছাড়া তার আর কোনো মামলাও নেই।
দীর্ঘ সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগে প্রমাণিত হয়। আসামির সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে হাইকোর্টের দেয়া নির্দেশনা অনুযায়ী পুর্নবাসনের জন্য শর্ত সাপেক্ষে নির্ধারিত শর্তে প্রবেশন অফিসারের নিয়ন্ত্রণে প্রবেশনে মুক্তি প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিচারক।