তূর্ণা নিশীথার চালক সিগন্যাল মানেননি

প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০১৯, ১২:০৪

তূর্ণা নিশীথার চালক সিগন্যাল না মানায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ছবি: ইউএনবি
চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা তূর্ণা নিশীথা এক্সপ্রেসকে আউটারে মেইন লাইনে থামার জন্য সিগন্যাল দেয়া হয়। কিন্তু ট্রেনের চালক সিগন্যাল মানেননি। যার কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার মন্দবাগ রেলস্টেশনের মাস্টার জাকির হোসেন চৌধুরী এ কথা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আউটার ও হোম সিগন্যালে লাল বাতি (সতর্ক সংকেত) দেয়া ছিল। কিন্তু তূর্ণা নিশীথার চালক সিগন্যাল অমান্য করে ঢুকে পড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।’
তিনি আরো বলেন, ‘সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর উদয়ন এক্সপ্রেসকে মেইন লাইন থেকে ১ নম্বর লাইনে আসার সিগন্যাল দেওয়া হয়েছিল। সেই হিসেবে উদয়ন ট্রেন ১ নম্বর লাইনে প্রবেশ করে। এ সময় নিশীথা ট্রেনের চালক সংকেত অমান্য করে উদয়ন ট্রেনের ওপর উঠে গেলে দুর্ঘটনা ঘটে।
কসবা উপজেলার মন্দভাগ রেলস্টেশনে গতকাল সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ৩টার দিকে দিকে বড় ধরনের ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা পর্যন্ত প্রশাসনের হিসাব অনুযায়ী ১৫ জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক যাত্রী।
জেলা প্রশাসক হায়াৎ উদ-দৌলা খান জানিয়েছেন, চালকের ভুলেই ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনার পরপরই রেল কর্তৃপক্ষ স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করে। পরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবির সদস্যরা উদ্ধার কাজে যোগ দেন।
মন্দবাগের স্থানীয় বাসিন্দা সালাম বলেন, ‘গভীর রাতে হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পাই। ঘর থেকে বের হয়ে এসে দেখি কান্নার শব্দ। এখানে সেখানে ছিটকে পড়ে আছে মরদেহ। পরে এলাকার সবাই বেরিয়ে আহতদের উদ্ধার করার চেষ্টা করি।’
এরই মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন রেলওয়ে সচিব মোহাম্মদ মোফাজ্জল করিম, জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান, পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, ৬০ বিজিবি সুলতানপুর ব্যাটালিয়নের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন। রেলমন্ত্রীও ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।
দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেন দুটি সরিয়ে লাইন আবার চলাচলের উপযোগী করতে লাকসাম ও আখাউড়া থেকে দুটি রিলিফ ট্রেন ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। ট্রেন চলাচল শুরু হতে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগতে পারে বলে রেল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।