পুলিশের সহযোগিতায় বাবাকে খুঁজে পেলো ময়মনসিংহের সাদিকুল

পাবনা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২১, ১৩:৩৪

ছবি: পাবনা প্রতিনিধি
পুলিশের সহযোগিতায় পরিবার ফিরে পেল পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার মোলাডুলি রেলস্টেশন এলাকায় পাওয়া এক শিশু।
গত ৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় একব্যক্তি জেলার ঈশ্বরদী থানার ওসি মোহাম্মদ আসাদুজ্জামানের মোবাইলে ফোন করে জানান, ৭/৮ বছরের একে ছেলেকে মোলাডুলি রেল স্টেশনে পাওয়া গেছে।
ওই ব্যক্তি আরো জানান, ছেলেটির নাম রুদ্র, বাবার নাম সুলতান ও বাড়ি ময়মনসিংহ জেলায়- সে শুধু এইটুকুই বলতে পারছে।
পরে ওই ছেলেকে ঈশ্বরদী থানায় আনা হয়। ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ছেলেটির ঠিকানা সংগ্রহ করার চেষ্টা করা হয়। গল্পগুজবের একপর্যায়ে ছেলেটি তার স্কুলের নাম বলতে না পারলেও স্কুলের শিক্ষকের নাম আব্দুল মালেক ও জামাল মাস্টার বলে জানায়। এইটুকু তথ্য পেয়ে ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ও থানায় যোগাযোগ করেন ঈশ্বরদী থানার পুলিশ।
গত এক সপ্তাহ ধরে যোগাযোগ করার পর গত ১২ এপ্রিল ত্রিশাল উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ফোনে জানান যে, রুদ্র ছেলেটির ঠিকানা তিনি পেয়েছেন, তবে ছেলেটির প্রকৃত নাম সাদিকুল ইসলাম। তার বাবার নাম সুলতান মাহমুদ, মা শরিফা বেগম।
এমন তথ্য পেয়ে রুদ্রকে জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় টিভিতে সে একটি কার্টুন দেখেছিল ও ওই কার্টুনে একটি ছেলের নাম রুদ্র ছিল। নামটা তার ভালো লাগে জন্য সে ওই নামটি পুলিশের কাছে বলেছে।
এরপর ছেলেটির বাবা সুলতান গত ১৩ এপ্রিল ঈশ্বরদী থানায় এসে উপস্থিত হলে তিনি বিস্তারিত তথ্য জানান। তিনি বলেন, সাদিকুলের নানার বাড়িও ত্রিশাল উপজেলায়। সাদিকুলের বাবা দ্বিতীয় বিবাহ করায় সাদিকুলের মা ঢাকা শহরে চলে যায়। ওই বাড়িতে তার মা না থাকায় বাড়িতে থাকতে তার ভাল লাগে না।
পুলিশ জানায়, সাদিকুলের মা ঢাকা থেকে গ্রামে বেড়াতে গেলে গত ৪ এপ্রিল সাদিকুল তার মা’র সাথে গ্রাম থেকে ট্রেনযোগে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়। এরপর থেকে তাকে আর পাওয়া যাচ্ছিল না। সাদিকুল গত কয়েকদিন ঈশ্বরদী থানায় থাকার পর সে এখানেই থেকে যেতে চায়।
ঈশ্বরদী থানার ওসি আসাদুজ্জামান বলেন, মূলত সাদিকুলের পিতামাতার বৈবাহিক সম্পর্ক ভাল না থাকায় ছেলেটির নিজ বাড়িতে ভাল লাগে না। সে আর বাড়িতে ফিরে যেতে চাচ্ছিল না। এজন্য সে তার সঠিক নামটি বলেনি। বর্তমান সমাজে প্রতিনিয়ত দ্বিতীয় বিয়ের উৎসব হয়ে থাকে। এতে তাদের সন্তানদের মনে কেমন বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয় তা অনেকে ভাবতেই চায় না। আমরা চাই না পারিবারিক অশান্তির কারণে সাদিকুলের (রুদ্র) এর মতো আর কোনো শিশু বাড়ি থেকে অজানা পথে চলে যাক।
তিনি আরো বলেন, সাদিকুলের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছি। ধন্যবাদ জানাই যারা এই শিশুকে তার পরিবারের নিকট হস্তান্তর করতে সহায়তা করেছেন তাদের সবাইকে।