স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, যারা আত্মসমর্পণ করেননি, তাদের পরিণাম ভালো হবে না। এখনো সময় আছে দ্রুত আত্মসমর্পণ করুন। না হলে তাদেরকে আইনের ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হবে।

কক্সবাজারের মহেশখালীর কালারমারছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে আজ শনিবার আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে অস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা দিয়ে ১৮ বাহিনীর ৯৬ জলদস্যু ও অস্ত্রের কারিগর আত্মসমর্পণ করেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মহেশখালীতে যারা আত্মসমর্পণ করেছেন; খুন ও ধর্ষণ ছাড়া আত্মসমর্পণকারীদের বাকি সব মামলা তুলে নেয়া হবে। স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেয়া হবে।

তিনি বলেন, যারা জলদস্যুতা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে রয়েছে তাদের প্রত্যেকের নাম পরিচয় আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে চলে এসেছে। একই সঙ্গে তাদের সহায়তাকারী প্রভাবশালী গডফাদারদের তালিকাও তৈরি করা হয়েছে। সন্ত্রাসী ও গডফাদার কেউ আইনের হাত থেকে রেহাই পাবে না।

কামাল বলেন, বর্তমান সরকার সারা দেশকে দস্যুমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত, মাদকমুক্ত দেশ গড়তে চায়। আজ ৯৬ জন জলদস্যু ও অস্ত্রের কারিগর আত্মসমর্পণ করেছেন। আর যারা আত্মসমর্পণ করেননি, তাদের রেহাই নেই।

তিনি আরো বলেন, দেশের যেখানে যাই প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের চিত্র ভেসে আসে। মানুষের আস্থা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বদলে দিচ্ছেন দেশ। কক্সবাজারের উন্নয়নে সমানতালে কাজ করছেন।

অনুষ্ঠানে আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, বাংলাদেশের মাটিতে কোনো জঙ্গি, সন্ত্রাসী ও অপরাধীর স্থান হবে না। যেকোনো সময় ৯৯৯ নম্বরে কল করে পুলিশের অনিয়মের বিরুদ্ধেও বলতে পারবেন। সে যেই হোক অপরাধীর ছাড় নেই।

আত্মসমর্পণকারী প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকার আর্থিক অনুদান দেয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানের পর অস্ত্র আইনের মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আত্মসমর্পনকারীরা ১৩টি ৩০৩ রাইফেল, একটি দেশীয় তৈরি দোনলা বন্দুক, ১৪১টি একনলা বন্দুক, ২৮টি ৩০৩ রাইফেলের গুলি ও ২৫৫টি কার্তুজ জমা দিয়েছে।

পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলম, কক্সবাজার-২ (কুতুবদিয়া-মহেশখালী) আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, কক্সবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফুল আফসার, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান বক্তৃতা করেন।

এর আগে ২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর র‌্যাবের মাধ্যমে মহেশখালী-কুতুবদিয়ার ৪৩ জলদস্যু আত্মসমর্পণ করেছিলেন।

আরো পড়ুন: ৯৬ জলদস্যু-অস্ত্র কারিগরের আত্মসমর্পণ