পাবনা সদর থানার ওসি ওবাইদুল হক। ছবি: সংগৃহীত
পাবনা সদর থানায় ডেকে নিয়ে গণধর্ষণের শিকার এক গৃহবধূর সঙ্গে অভিযুক্তের বিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে সোমবার ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি অভিযোগকারীর সঙ্গে অভিযুক্তকে থানার ভেতর বিয়ে দেওয়ার ঘটনায় পাবনা সদর থানার ওসি ওবাইদুল হককে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার বিকেলে পাবনার পুলিশ সুপার (এসপি) শেখ রফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এসপি জানান, পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার) মো. ফিরোজ আহমেদকে এই কমিটির প্রধান করা হয়েছে। বাকিরা হলেন কোর্ট ইন্সপেক্টর ও ডিআই-১।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিন সন্তানের জননী ওই নারীর বাড়ি পাবনা সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়নের যশোদল গ্রামে। তাঁর অভিযোগ, প্রতিবেশী রাসেল আহমেদ গত ২৯ আগস্ট এক সহযোগীসহ তাঁকে নিজ বাড়িতে ধর্ষণ করেন। দুই দিন পর (৩১ আগস্ট) তাঁকে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অফিসে নিয়ে তিনদিন আটকে রেখে চার-পাঁচ জন গণধর্ষণ করেন। বিষয়টি ওই নারী বাড়ি ফিরে স্বজনদের জানালে গত ৫ সেপ্টেম্বর তাঁকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেই গৃহবধূ নিজেই বাদী হয়ে পাবনা সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এ ঘটনায় পুলিশ রাসেলকে প্রথমে আটক করে। এরপর অভিযুক্ত রাসেলের সঙ্গে অভিযোগকারী ওই নারীকে থানায় ডেকে এনে বিয়ে দিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।
এ বিষয়ে দাপুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য দৌলত আলী জানান, তাঁর উপস্থিতিতেই এলাকা থেকে পাবনা সদর থানার এসআই একরামুল হক ধর্ষণের অভিযোগে রাসেলকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। দৌলত বলেন, ‘পরে জানতে পেরেছি রাসেলের সঙ্গে ওই নারীর বিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
ধর্ষণের শিকার ওই তিন সন্তানের জননী বলেন, ‘রাসেলকে পুলিশ আটকের পর থানায় নিয়ে আসে। এরপর ওসির নির্দেশে কাজী ডেকে থানার মধ্যেই আমাদের বিয়ে দিয়েছেন।’
আর অভিযুক্ত রাসেল বলেন, ‘রিমান্ডে নেওয়ার ভয় দেখিয়ে পুলিশ জোর করে আমাকে বিয়ে দিয়েছে। আমি নির্দোষ। আমাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে।’
পাবনা সদর থানার ওসি ওবাইদুল হক সোমবার বিকেলে বলেন, ‘প্রথম দিকে মেয়েটির কোনো অভিযোগ ছিল না। পরে পরিবারের সম্মতিতে রাসেলের সঙ্গে তাঁর বিয়ে সম্পন্ন হয়। তবে থানায় কোনো বিয়ে হয়েছে কি না, এ তথ্য আমার কাছে নেই।’