
জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা। ফাইল ছবি
অবশেষে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রী পদমযার্দা) ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (পিসিজেএসএস) সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা।
৭৭ বছর বয়সে এসে তিনি ভোটার তালিকা নাম লেখালেন এবং জাতীয় পরিচয়পত্র পেয়েছেন।
গতকাল রবিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাঙ্গামাটি সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সন্তু লারমা দেশের অন্যান্য নাগরিকের মতো নির্বাচন অফিসে এসে ভোটার তালিকায় নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য ছবি তোলাসহ সংশ্লিষ্ট সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন। যাবতীয় সকল কাজ শেষে উনাকে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান করা হয়েছে।
এদিকে সন্তু লারমা জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) নম্বর ব্যবহার টিকাকেন্দ্রে এসে করোনাভাইরাসের টিকা নিয়েছেন বলেন নিশ্চিত করেছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. বিপাশ খীসা।
জেএসএস সূত্র জানায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আইনে রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান- এই তিন পার্বত্য জেলার স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে নতুন করে ভোটার তালিকা প্রণয়ণের দাবিতে দীর্ঘ সময়েও ভোটার হননি সাবেক এই গেরিলা নেতা। এছাড়া অনুষ্ঠিত বিভিন্ন নির্বাচনেও তিনি এ কারণে ভোট প্রদানের সুযোগ পাননি। অবশেষে বিভিন্ন সংকটের কারণে ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তকরণ ও জাতীয় পরিচয়পত্র গ্রহন করেছেন পাহাড়ের এই অবিসংবাদিত নেতা।
১৯৪৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি রাঙ্গামাটির জেলার মহাপুরম এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা। পিতা মৃত চিত্ত কিশোর লারমা ও মাতা মৃত সুভাষিনী দেওয়ানের পুত্রসন্তান সন্তু লারমার বয়স এখন ৭৭ বছর। বর্তমানে জেলা শহরের কল্যাণপুরে আঞ্চলিক পরিষদের নিজস্ব বাসভবনে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন তিনি।
সন্তু লারমার বড় ভাই মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা (এমএন লারমা) ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের স্বাধিকার আদায়ের প্রথম সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (পিসিজেএসএস) প্রতিষ্ঠাতা। ভাইয়ের মৃত্যুর পরবর্তী সময় ধরে বর্তমানে সন্তু লারমাই জেএসএসের শীর্ষ নেতা।
১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে জেএসএসের পক্ষ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষর করেন সন্তু লারমা। পরবর্তীতে এই চুক্তি দেশে-বিদেশে শান্তি চুক্তি নামে পরিচিতি পেয়েছে। তবে চুক্তি স্বাক্ষরের এই দুই যুগে পাহাড়ে এক জনসংহতি সমিতি ভেঙে চার আঞ্চলিক সংগঠন হয়েছে।