রামু বৌদ্ধমন্দিরে হামলার ১০ বছর, থমকে আছে বিচারকার্য

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৮:৪৯

ফাইল ছবি (ইউএনবি)
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে গুজবের জের ধরে কক্সবাজারের রামুর বৌদ্ধ বিহার ও বসতিতে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৯ বছর পূর্ণ হয়ে ১০ বছরে পদার্পন করল আজ ২৯ সেপ্টেম্বর (বুধবার)।
সাক্ষীদের সাক্ষ্য দিতে অনীহায় থমকে আছে ঘটনার বিচারকার্য। ঘটনার বিচারকার্য শেষ করে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনার পাশাপাশি সব সম্প্রদায়ের মানুষের সম্প্রীতি অটুট থাকুক এমনটাই দাবি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের।
২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর উত্তম বড়ুয়া নামের এক বৌদ্ধ যুবকের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পবিত্র কোরআন অবমাননার একটি ছবি ট্যাগকে কেন্দ্র করে রামুতে সংঘটিত হয় ভয়াবহ ঘটনা। রাতের অন্ধকারে রামুতে ১২টি বৌদ্ধ বিহার, ৩০টি বসতঘরে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে দুষ্কৃতিকারীরা।
এর পরদিন ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে একইভাবে উখিয়া ও টেকনাফে আরও সাতটি বৌদ্ধ বিহার ও ১১টি বসতঘরে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। ঘটনার পর পরই সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত বিহার ও ঘরবাড়ি নতুন ভাবে পুণনির্মাণ করে দেয় সরকার। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় নির্মিত এসব বৌদ্ধ বিহার ২০১৩ সালের ৩ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এসব ঘটনায় ১৯টি মামলা দায়ের হলেও একটি মামলা আপোষে নিষ্পত্তি হয়। এজাহারভুক্ত ৩৭৮ জনসহ অজ্ঞাত আরও ১৪/১৫শ জনকে অভিযুক্ত করে ১৯টি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। পরবর্তীতে ১৮টি মামলায় এক হাজার ২০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ।
রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহারের আবাসিক ভিক্ষু ও কক্সবাজার বৌদ্ধ সুরক্ষা পরিষদের সভাপতি প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু জানান, ঘটনার ৯ বছর পার হয়ে গেছে। দীর্ঘসূত্রিতার কারণে মামলার প্রথমদিকে যে গতি ছিল তা ভাটা পড়েছে। ভুক্তভোগীদের মধ্যে অনেকে সাক্ষ্য দেয়ার ক্ষেত্রে আর এগুতে চায় না। সবকিছু যেন ঠিক হয়ে গেছে এমন ভাব সবার। যার দরুন মামলার কার্যক্রম থমকে আছে।
রাষ্ট্রপক্ষ ও ভুক্তভোগী সাক্ষীদের মধ্যে সমন্বয় করে মামলার সুরাহা হবে বলে আশা করেন বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের এ ধর্মীয় গুরু।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম জানান, ওই ঘটনায় মামলা হয়েছিল ১৯টি। এরমধ্যে পুলিশ বাদী হয়ে ১৮টি মামলা করে। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে অপর একটি মামলা করলেও পরবর্তীতে বিবাদীদের সঙ্গে আপোষনামায় নিষ্পত্তি হয়। বিচারাধীন ১৮টি মামলায় আদালতে সাক্ষী না আসায় বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘসূত্রিতা।
তবে সাক্ষীদের উপস্থাপনের মধ্যদিয়ে সব মামলা নিষ্পত্তি করে সংশ্লিষ্ট অপরাধিদের বিচার নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি। -ইউএনবি