জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি: নৌ রুটে ভাড়া দ্বিগুণ

বরিশাল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২১, ১৫:১৮

নৌ রুটে ভাড়া দ্বিগুণ
জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিভাগীয় শহর বরিশালসহ পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর এবং ঝালকাঠি জেলায় অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার রুটে সব ধরনের যাত্রী এবং পণ্যবাহী পরিবহন বন্ধ রয়েছে। বাস ট্রাক ওনার্স এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বানে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে সব ধরনের পরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে। এর ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে এসব রুটের যাত্রী এবং এলাকার ব্যবসায়ীদের।
এদিকে, সরকারিভাবে লঞ্চের ভাড়া না বাড়লেও অভ্যন্তরীণ রুটের নৌ-যানগুলোতে যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। এ নিয়ে শুক্রবার সকাল থেকেই নৌ বন্দরে যাত্রীদের সাথে দফায় দফায় বসচা চলছে নৌযান শ্রমিকদের।
সরেজমিনে বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এবং রূপাতলী বাসস্ট্যান্ডে ঘুরে দেখা গেছে, যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে বাস মালিক এবং শ্রমিকরা। এর ফলে যাত্রীরা দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়া দিয়ে থ্রি-হুইলার এবং মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন হালকা যানে গাদাগাদি করে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা করছে।
রূপাতলী থেকে মাইক্রোবাসে আমতলীর উদ্দেশ্যে যাত্রা করা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি আশরাফ মৃধা অভিযোগ করে বলেন, ‘তেলের মূল্য বৃদ্ধির খেসারত দিতে হচ্ছে জনসাধারণকে। এতে আমাদের ওপর চাপ পড়েছে। অতিরিক্ত ভাড়া দেয়ার পাশাপাশি ভোগান্তিও বেড়েছে কয়েকগুণ।
তেলের মূল্য বাড়ানোর প্রতিবাদ জানিয়ে কেন্দ্রীয় নথুল্লাবাদ থেকে মাইক্রোবাসে মাওয়াগামী ঝালকাঠির বাসিন্দা সেলিম মুন্সি বলেন, ‘হুট করেই তেলের দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এর প্রভাব শুধু বাসেই পড়েনি। পণ্য পরিবহন থেকে শুরু করে নিত্য পণ্যের ওপরেও পড়েছে। ইতোমধ্যে প্রতি কেজি সবজিতে খুচরা পর্যায়ে ১০ থেকে ১২ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে সাকুরা পরিবহন কাউন্টারের ম্যানেজার আশরাফুল আলম চুন্নু বলেন, ‘কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় আমরা বাস চলাচল বন্ধ রেখেছি। কেন্দ্র থেকে পরবর্তী ঘোষণা না আসা পর্যন্ত বাস চলাচল বন্ধ থাকবে। বৃহৎ স্বার্থে এতোটুকু লোকসান মানতেই হবে।
বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লিটন মোল্লা বলেন, ‘কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা বরিশাল থেকে সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ রেখেছি। কেন্দ্রের নির্দেশনা পেলেই আবার বাস চলাচল শুরু হবে।
এদিকে, ‘ডিজেলের দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে বরিশালের অভ্যন্তরীণ রুটের নৌযান গুলোতেও। সরকারিভাবে ভাড়া বৃদ্ধি করা না হলেও প্রতিটি লঞ্চে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার সকালে বরিশাল নদী বন্দরে দেখা যায়, প্রতিটি রুটে যাত্রীদের কাছ থেকে ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত আদায় করা হচ্ছে। এ নিয়ে সকাল থেকে দফায় দফায় যাত্রীদের সাথে বাকবিতণ্ডা হয় নৌযান শ্রমিকদের। তার পরেও বাধ্য অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে ছুটতে হচ্ছে যাত্রীদের।
বরিশাল থেকে ইলিশা নৌ-রুটের যাত্রীবাহী লঞ্চের মাস্টার মো. নান্না মিয়া বলেন, ‘জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় গন্তব্যে পৌঁছতে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত জ্বালানি খরচ বেড়েছে। ভাড়া না বাড়ালে লোকসান গুনতে হবে। তাই মালিকদের নির্দেশে ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।