রায়ে সন্তুষ্ট, তবে সব খুনির ফাঁসি চেয়েছিলাম : আবরারের মা

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫:৩১

রায় শোনার পর আবরারের মা’র আহাজারি। ছবি : কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
‘রায়ে আমি সন্তুষ্ট। তবে আমি সব খুনির ফাঁসি চেয়েছিলাম। আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই এটা আমি বলছি।’ রায় ঘোষণার পরপরই এমন প্রতিক্রিয়া জানান বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের মা রোকেয়া খাতুন।
আজ বুধবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আদালতের রায় শোনার পরে কুষ্টিয়া শহরের পিটিআই সড়কের বাসায় তিনি এসব কথা বলেন।
রোকেয়া খাতুন বলেন, আদালত যে রায় দিয়েছে আমরা সন্তোষ প্রকাশ করছি; সেই সঙ্গে এ রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি করছি। আমার ছেলেকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে হত্যা মামলায় সব আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি আশা করেছিলাম। যে ২০ জনকে আদালত ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন এবং পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন এতে আইনের প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল। যেদিন এ রায় কার্যকর হবে সেদিন সেদিন আমরা ভাববো আমরা বিচার পেয়েছি।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা অমিত সাহার নাম উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, সেই তো সবকিছুর সঙ্গে ছিল। আমি অমিতেরও ফাঁসি চাই।
আবরারের ছোট ভাই আবরার ফায়াজ বালেন, ভাইয়ের হত্যাকারীদের সবার ফাঁসি চেয়েছিলাম। বিচার বিভাগের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। আদালতের রায়ে আমি খুশি। ভাই ছিল আমার সাহস ও ভরসা। ভাইকে হারিয়ে আজ আমরা নিঃস্ব। ভাই ছিল কলিজার টুকরা। সেই ভাইকে হত্যাকারী পলাতক আসামিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে এবং তাদের শাস্তি দ্রুত কার্যকর করতে হবে।
আজ ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার ২০ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, বহিষ্কৃত তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার ওরফে অপু, বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন ওরফে শান্ত, বহিষ্কৃত উপ-সমাজসেবাবিষয়ক সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, বহিষ্কৃত ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, বহিষ্কৃত কর্মী মুনতাসির আল জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, মুজাহিদুর রহমান, মনিরুজ্জামান মনির, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুর রহমান মাজেদ, শামীম বিল্লাহ, এ এস এম নাজমুস সাদাত, আবরারের রুমমেট মিজানুর রহমান, শামসুল আরেফিন রাফাত, মোর্শেদ অমত্য ইসলাম, এস এম মাহমুদ সেতু, মুহাম্মদ মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল ওরফে জিসান, এহতেশামুল রাব্বি ওরফে তানিম ও মুজতবা রাফিদ।
এদের মধ্যে তিন আসামি জিসান, তানিম ও রাফিদ পলাতক।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহতামিম ফুয়াদ, মুয়াজ ওরফে আবু হুরায়রা, বহিষ্কৃত গ্রন্থ ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ইশতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, বহিষ্কৃত আইনবিষয়ক উপ-সম্পাদক অমিত সাহা ও আকাশ হোসেন। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।