
জানাজায় মানুষের ঢল নামে। ছবি : সংগৃহীত
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী ‘এমভি অভিযান-১০’ অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়ে মৃতদের মধ্যে ৩০ জনের জানাজা সম্পন্ন হয়েছে।
আজ শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় বরগুনার সার্কিট হাউজ মাঠে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ইমামতি করেন কালেক্টরেট মসজিদের ইমাম মাওলানা জাহিদুল ইসলাম।
জানাজায় মানুষের ঢল নামে। এতে উপস্থিত ছিলেন বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান ও পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর মল্লিক প্রমুখ।
লাশ দাফনের জন্য পোটকাখালী গণকবরে নেওয়া হয়।
এর আগে গতকাল শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) রাত ১১টার দিকে লাশবাহী ট্রাকে করে মরদেহগুলো বরগুনা সদর হাসপাতালে এসে পৌঁছায়। এসময় স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে বরগুনা সদর হাসপাতাল প্রাঙ্গণ।
চারজনের লাশ ঝালকাঠি থেকেই স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এরা হলেন- বরগুনা জেলা পাথরঘাটা উপজেলার মৃত হোসেন আলীর ছেলে আব্দুল রাজ্জাক মাস্টার (৬২), বরগুনার বেতাগী উপজেলার আব্দুল কাদেরের ছেলে মো. রিয়াজ হাওলাদার (৩৫), বরগুনার বামনা উপজেলার সঞ্জিব চন্দ্রের ছেলে স্বপ্লীল চন্দ্র (১৪), ও বামনা উপজেলার জাহানারা বেগম (৪৫)।
বরগুনায় আনা মরদেহের মধ্যে তিনজনের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। এরা হলেন- বরগুনা সদরের আমতলী নিমতলী এলাকার জাহানারা ও বরগুনা সদরের লেমুয়া খাজুরা এলাকার যমজ দুই বোন লামিয়া ও সামিয়া।
সকালে বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান জানান, লাশগুলো বেশিরভাগ পুড়ে বিকৃত হয়ে যাওয়ায় চিনতে পারছেন না স্বজনরা। মৃতদেহের পরিচয় শনাক্তে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে নলছিটির সুগন্ধা নদীর পোনাবালীয়া ইউনিয়নের দেউরী এলাকায় বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চের ইঞ্জিন রুম থেকে আগুন লাগে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৭০ জন। ঢাকায় পাঠানো হয়েছে ১৬ জনকে। আহত হয়েছেন শতাধিক।
শুক্রবার দিনভর তল্লাশি চালিয়ে পোড়া লঞ্চ আর নদী থেকে ৩৬ জনের লাশ উদ্ধার করার কথা জানায় ফায়ার সার্ভিস। ঢাকায় নেওয়ার পথে মৃত্যু হয় দগ্ধ এক শিশুর। আর ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনিস্টিউটে পাঠানো হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় এক প্রৌঢ়ের।