-61caada680f63.jpg)
লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে মৃতদের মরদেহ। ফাইল ছবি
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আরও একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মোট ৪৩ জনের লাশ পাওয়া গেলো।
উদ্ধার অভিযানের পঞ্চম দিন আজ মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে ৮টার দিকে নদীর লঞ্চ টার্মিনাল এলাকায় লাশটি ভেসে ওঠে।
ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিন ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম জানান, সকাল ৮টায় সুগন্ধা নদীতে লাশ ভেসে উঠতে দেখেন স্থানীয়রা। খবর দিলে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল উদ্ধার করে। লাশটি পুরুষের। বয়স আনুমানিক ৩০ বছর। মুখমন্ডল ঝলসে গেছে, গায়ে সোয়েটার রয়েছে। এখনও পরিচয় শনাক্ত হয়নি।
ঝালকাঠি সদর থানার ওসি (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম সোহাগ জানান, এর আগে গতকাল সোমবার লঞ্চের ক্যান্টিনের বাবুর্চি শাকিল মোল্লার লাশ উদ্ধার করা হয়। নারায়ণগঞ্চের ফতুল্লার বাসিন্দা তিনি। তার মামা লুৎফর রহমান লাশ শনাক্তের পরে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড ও প্রাণহানির ঘটনায় ঝালকাঠি সদর থানায় আরেকটি মামলা দায়ের হয়েছে। গতকাল সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে নিখোঁজ যাত্রীদের স্বজন মো. মনির হোসেন (৩৮) বাদী হয়ে ২৮০/২৮৫/২৮৭ এবং ৩০৪ক/১০৯ পেনাল কোর্ড ধারায় এ মামলাটি দায়ের করেন। ঝালকাঠি সদর থানার মামলা নম্বর ১২। এ মামলায় অভিযান-১০ লঞ্চের মালিক, চালকসহ নামধারী ৮ জন, অজ্ঞাত আরো ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
ঝালকাঠি সদর থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি অপারেশন) মো. মালেক জানান, ঢাকা ডেমরা এলাকার খলিলুর রহমানের ছেলে মো. মনির হোসেনের লিখিত এজাহারটি গ্রহণ করে মামলা হিসেবে রুজু করা হয়েছে।
এ মামলার আসামিরা হলেন- অভিযান ১০ লঞ্চের মালিক হামজালাল শেখ, লঞ্চে থাকা দুই মাস্টার রিয়াজ সিকদার ও মো. খলিল, দুই ড্রাইভার মো. মাসুম ও কালাম, সুপারভাইজার মো. আনোয়ার, সুকানী আহসান ও কেরানী কামরুল।
মামলার বাদী মনির হোসেন বলেন, লঞ্চে আগুনের ঘটনায় এই লঞ্চে থাকা যাত্রী তার বোন তাসলিমা আক্তার (৩২), দুই ভাগনি সুমাইয়া আক্তার মীম (১৫) সুমনা আক্তার তানিশা (১০) ও ৭ বছর বয়সী ভাতিজা জোনায়েদ ইসলাম বায়জিত এখনো নিখোঁজ রয়েছে।
মামলার এজাহারে তিনি লিখেছেন, রাতে লঞ্চের ইঞ্জিনে যখন ত্রুটি দেখা দেয় তখনো লঞ্চের স্টাফরা যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া তুলতে থাকেন। লঞ্চটির নিচতলার পেছনের অংশে থাকা ইঞ্জিন রুমের ওখান থেকে যখন আগুন ধরে যায় তখন চালক ও স্টাফরা যাত্রীদের বাঁচাতে লঞ্চ তীরে ভিড়ানোর বা নোঙ্গর করার চেষ্টাটুকও করেননি। বরং নিজেরা ঝাঁপিয়ে পরে পালিয়েছেন। মামলায় এজাহারে লঞ্চটিতে নিরাপত্তা সামগ্রীর ঘাটতির কথাও উল্লেখ করা হয়।
ঝালকাঠিতে লঞ্চ দুর্ঘটনায় এটি দ্বিতীয় মামলা। এর আগের মামলায় লঞ্চের মালিক হামজালাল শেখকে রাজধানীর কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
অপরদিকে দ্বিতীয় দিনের মতো আজ ঝালকাঠি সিআইডি পুলিশের পক্ষ থেকে শহরের পৌরমিনি পার্ক ডিএনএ পরীক্ষার জন্য এলাকায় স্বজনদের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে।
এছাড়া বরগুনা সদর জেনারেল হাসপাতালে ঢাকা থেকে আসা সিআইডির ৪ সদস্যের ফরেনসিক দল ১২ স্বজনের ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করেছেন।