Logo
×

Follow Us

জেলার খবর

বরিশাল সিটি মেয়রকে ৭ কাউন্সিলরের লিগ্যাল নোটিশ

Icon

বরিশাল প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০২ জানুয়ারি ২০২২, ২০:৩৩

বরিশাল সিটি মেয়রকে ৭ কাউন্সিলরের লিগ্যাল নোটিশ

বরিশাল সিটি কর্পোরেশন

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের (বিসিসি) দায়িত্বশীল পদে থেকে বেআইনি ও খামখেয়ালী করে সিটি করপোরেশন পরিচালনার অভিযোগ এনে মেয়রসহ তিনজনকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন বর্তমান পরিষদের সাত কাউন্সিলর। 

রবিবার (২ জানুয়ারি) সাত কাউন্সিলরের নিযুক্ত আইনজীবী আজাদ রহমান নোটিশ পাঠান। ডাকযোগে এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ২৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনিছুর রহমান। 

তিনি জানান, ডাকযোগে নোটিশ না পাঠালে তারা নোটিশ রাখতো না। নোটিশটি ফেলে দিত। এজন্য আইনি মাধ্যমে ডাকযোগে পাঠানো হয়েছে। এই কাউন্সিলর বলেন, বর্তমান মেয়রের অত্যাচারে নগরবাসী অতিষ্ঠ। আমরা এর প্রতিকার চাই। 

যদিও কয়েকজন কাউন্সিলর নোটিশ পাঠানোর বিষয়টি জানেন না বলে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে কাউন্সিলর আনিছুর রহমান শরীফ বলেন, তারা সকলেই নোটিশে স্বাক্ষর করেছেন। কিন্তু এখন বলছেন না হয়তো ভয়ে। আগামী ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে লিখিত জবাব চাওয়া হয়েছে ওই নোটিশে।

বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুক হোসেন বলেন, নোটিশের বিষয়টি আমি কিছুই জানি না। গণমাধ্যমকর্মীদের কাছ থেকে জানতে পারলাম। নোটিশ পেলে বলতে পারবো আসলে কী বিষয়ে নোটিশ করা হয়েছে। এরপরে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। 

বরিশাল সিটি মেয়র ছাড়াও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিবকে নোটিশ করা হয়। 

নোটিশ দাতারা হলেন- ২৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিল হুমায়ুন কবির, ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌহিদুল ইসলাম, ২৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদ আহমেদ, ২০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান, ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আমির হোসেন বিশ্বাস, ২৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শরীফ মো. আনিছুর রহমান (আনিছ শরীফ) ও ২৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এনামুল হক বাহার। 

নোটিশে উল্লেখ করা হয়, সিটি করপোরেশনের প্রথম সভায় নির্বাচিত কাউন্সিলরদের নগর ভবনে যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া সকল কাউন্সিলরদের ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ৪৩ হাজার ৫০০ টাকা হারে সম্মানী ও অন্যান্য ভাতা প্রদান করা হয়। অক্টোবর-নভেম্বর মাসে সম্মানী ও অন্যান্য ভাতা ৫০ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়। অন্যান্য কাউন্সিলরদের অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে সম্মানী এবং অন্যান্য ভাতা ৫০ হাজার টাকা দেয় সিটি করপোরেশন। আর ডিসেম্বর মাসেও একই হারে ভাতা প্রদান করা হয়েছে। নোটিশদাতা সাত কাউন্সিলরকে অক্টোবর-নভেম্বর মাসে ৪৩ হাজার ৫০০ টাকা করে দেয়া হয়। একই পরিষদে কাউন্সিলরদের সাথে দ্বিমুখি আচরণ আইনগত গ্রহণযোগ্য নয় বলে উল্লেখ করা হয়। 

এছাড়া স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া এবং কাউন্সিলরদের স্বাক্ষর ছাড়া জনস্বার্থ উপেক্ষা করে হোল্ডিং ট্যাক্স এক হাজার শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। একই সাথে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের স্থায়ী বিভিন্ন কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের বেআইনিভাবে ওএসডি রেখে মাস্টার রোলে অদক্ষ কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ করে সিটি কর্পোরেশনের কাজ পরিচালনা করে আসছেন। 

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আইন, বিধি, সরকারী নিয়মকানুন, প্রজ্ঞাপন অনুসরণ না করে বর্তমান মেয়র, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সচিব খামখেয়ালীপনাভাবে নগরভবনের কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। যার ফলে কর্পোরেশনের কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। জনঅসন্তোষ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া কর্পোরেশনের আওতাধীন হাট-বাজার বিধি অনুসারে টেন্ডারের মাধ্যমে পরিচালনা না করে একশ্রেণির ব্যক্তিদের স্বার্থ রক্ষা করে নির্দিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে দিয়ে পরিচালনা করছে। বেআইনিভাবে নিযুক্ত করা ইজারাদারগণের অত্যাচারে জনসাধারণ ক্ষুব্ধ। 

নোটিশ দাতা আইনজীবী আজাদ রহমান বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মনপুত জবাব না পেলে নোটিশদাতা কাউন্সিলররা আদালতের মাধ্যমে আইনের আশ্রয় নিতে পারবেন। 

তিনি জানান, নোটিশের অনুলিপি স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সিনিয়র সচিব, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার, বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের পরিচালক, বরিশাল জেলা প্রশাসক, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের উপ-পরিচালক, জনতা ব্যাংক লিমিটেড বরিশাল কর্পোরেট শাখার ব্যবস্থাপক ও জনতা ব্যাংক লিমিটেড বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের মহা-ব্যবস্থাপককে পাঠানো হয়েছে। 

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে মেয়র পদে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ ৪০ জন কাউন্সিলর নিয়ে বর্তমান পরিষদ গঠন করেন।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫