সৈয়দপুরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২২, ১৭:৪৬

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা কর্মসূচি পালন করছেন। ছবি: সাম্প্রতিক দেশকাল
সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার সৈয়দপুর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হামিদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (৫ মার্চ) সকালে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী ওই প্রধান শিক্ষককে অপসারণের দাবিতে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা কর্মসূচি পালন করেন।
সূত্র জানায়, ২০২১ সালে করোনার কঠোর বিধিনিষেধ চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন সময় বিদ্যালয়ের নিজস্ব তহবিল থেকে প্রায় ছয় লাখ ৮৭ হাজার টাকা নিজেই চেক ও ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে উত্তোলন করেছেন। এর কোনো ভাউচার করা হয়নি। পাঁচ মাস আগে বিদ্যালয়ের পুরানো জানালার গ্রিল বিক্রি করে কয়েক লাখ আত্মসাত করেন তিনি।
সৈয়দপুর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রায় সাড়ে পাঁচশ’ শিক্ষার্থী রয়েছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ওমিক্রন অতিবাহিত হবার পর দেশজুড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত ক্লাস চালু হয়। বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক সশরীরে ক্লাসের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক এ পর্যন্ত একদিনও বিদ্যালয়ে আসেননি। বিদ্যালয়ে না এসে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে শাহজাদপুরে বসে বিদ্যালয় নিয়ন্ত্রণ করছেন।
এ কারণে চলতি বছরে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদেরকে বাধ্য হয়ে প্রশংসাপত্র নিতে শাহজাদপুরে যেতে হচ্ছে। প্রসংশাপত্র নিতে অনৈতিকভাবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে তিনশ’ টাকা করে নিচ্ছেন তিনি।
বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী ও দশম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী জানান, প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে না আসার কারণে শ্রেণির কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক জানান, সাধারণ শিক্ষকদের বেতনের শিটে সই না করে প্রধান শিক্ষক বাড়িতে অবস্থান করছেন। এর ফলে শিক্ষকরা বেতন তুলতে পারছেন না। তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে।
এদিকে তার অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ায় বেশ কয়েকজন শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ওই প্রধান শিক্ষক।
জালালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক শাহাদৎ হোসেন জানান, প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে মাসে দুই বা একদিন আসেন। এতে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। তিনি ইচ্ছেমত বিভিন্ন সময় নানা ফান্ডের কথা বলে শিক্ষার্থীদের নিকট টাকা দাবি করেন।
এদিকে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ফারুক হোসেন অভিযোগ করেন, সীমাহীন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আশা করছেন এলাকাবাসী।
সৈয়দপুর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল হামিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
শাহজাদপুর
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মোহাম্মদ শামসুজ্জোহা
জানান, প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে
লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে তাকে
দুই বার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তবে সে কোনো
উত্তর দেয়নি। সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিকট দ্রুতই লিখিত
ভাবে জানানো হবে। তদন্ত পূর্বক
প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা
গ্রহণ করা হবে।