Logo
×

Follow Us

জেলার খবর

৩ লাখ মানুষের শহরে ডাক বিলি করেন দুই পোস্টম্যান

Icon

আজিজুর রহমান পায়েল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২২, ১৮:১০

৩ লাখ মানুষের শহরে ডাক বিলি করেন দুই পোস্টম্যান

পুরনো কর্মীরাই টিকিয়ে রেখেছেন ডাক। ছবি- ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

একসময় যোগাযোগের অন্যতম প্রধান মাধ্যম ছিল ডাক চিঠি কিংবা পোস্ট অফিসের সেবা। তবে কালের বিবর্তনে দিন দিন কমেছে তাদের কদর। নেই নতুন লোকবলও। পুরনো কর্মীরাই টিকিয়ে রেখেছেন এই মাধ্যম। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে ডাক বিভাগের এমনই দুই পোস্টম্যান আবদুল কুদ্দুস ও আহসান হাবিব।

শহরের প্রায় ৩ লাখ মানুষের সেবা দিচ্ছেন এই দুই পোস্টম্যান।

জানা যায়, পুরো শহরে ডাক বিলির কাজ করেন তারা। এছাড়া জেলার অন্য ডাক বিভাগের অবস্থা আরো শোচনীয়। উপজেলা ডাকঘর ও উপ ডাকঘরেও পোস্টম্যানের পদ শূন্য রয়েছে। জেলা শহরে ডাক বিলির দায়িত্ব ছিল ১০ জন পোস্টম্যানের। পদোন্নতি ও অবসরের কারণে এখন পোস্টম্যানের সংখ্যা ঠেকেছে দু’জনে। প্রতিদিন দেড়-দুইশ রেজিস্টার্ড ও সাধারণ চিঠি বিলি করতে হয় তাদের। এছাড়া আছে পার্সেল। ডাক পৌছাতে গিয়ে হয়রান-পেরেশান এই দুইজন ডাক পিয়ন।

কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এই লোকবল সমন্বয় করেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান প্রধান ডাকঘরের পোস্ট মাস্টার সিদ্দিক আলী।

এছাড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রামে থাকা বিভাগীয় ও অবিভাগীয় ডাকঘরগুলোতেও রয়েছে নানা সমস্যা। লোকবল সংকট ছাড়াও জরাজীর্ণ ডাকঘর থেকেই চলছে ডাক সেবা।

এসব ডাকঘরে ডাক পিয়ন, রানার ও অপারেটর পদে লোকবল নেই বললেই চলে।

জেলার নাসিরনগর,আখাউড়া, কসবা, বিজয়নগর, সরাইল ও নবীনগর উপজেলা পোষ্ট অফিস এবং আশুগঞ্জ, শ্যামগ্রাম, সলিমগঞ্জ, কাইতলাসহ আরো কয়েকটি উপ-ডাকঘরে ৪২ জন ডাক পিয়নের জায়গায় কর্মরত আছেন মাত্র ১০ জন।

তবে এ নিয়ে কথা বলতে নারাজ ডাক বিভাগের সংশ্লিষ্ট এলাকার পরিদর্শক বিশ্বজিৎ দত্ত। লোকবল সংকট আছে জানালেও এনিয়ে বিস্তারিত জানাতে কর্তৃপক্ষের অনুমতির অজুহাত দেখান তিনি।

বিজয়নগর উপজেলার বিজয় হরষপুর ডাকঘর। অল্প পরিসরের এই ডাকঘরটির অবস্থা বেহাল। ওপরের টিনের চাল ভাঙ্গাচুরা। চারপাশের  বেড়াতেও ফাঁকফোকর। জানালারও একই দশা। আসবাবপত্র নড়বড়ে। এমনকি লেখার কাগজপত্র পর্যন্ত অন্যের কাছ থেকে চেয়ে আনতে হয়। পোষ্ট মাষ্টার মাওলানা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঝড়ে ঘরটি নষ্ট হয়ে গেছে।

এই ডাকঘরটির মতোই নানা সমস্যায় জেলার অবিভাগীয় ১৩৫টি শাখা ডাকঘর। নবীনগরের জালশুকা গ্রামের ডাকঘরে নেই ডাকপিয়ন।

সদর উপজেলার সুলতানপুর ডাকঘরের পোস্ট মাষ্টার আল আমিন হোসেন জানান, তার এখানে পোস্টম্যান নেই ২ বছর ধরে। পোষ্টম্যানের দায়িত্বও তিনিই পালন করছেন। রানারেরও সমস্যা। একারণে নিয়মিত ডাক পৌঁছে না তার এখানে। সপ্তাহে একদিন ডাক আসে।

নবীনগরের রসুল্লাবাদ ডাকঘরের পোষ্ট মাষ্টার হাবিবুল্লাহ বাহার জানান, আগে নিয়মিত ডাক আসলেও রানারের কারণে এখন একদিন পরপর ডাক আসে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এক সময় এসব ডাকঘরের অবস্থা ছিল জমজমাট। সবধরনের চিঠিপত্র, মানি অর্ডারে আসা টাকার জন্যে মানুষের ভিড় লেগে থাকতো সেখানে। এখন নানা মাধ্যমে এসব সুবিধা গ্রহণ করছেন মানুষ। সেকারণে সরকারী ডাক সেবার ওপর নির্ভরতা কমেছে। তারপরও এলাকার ঐতিহ্য হিসেবে স্থানীয়রা ডাকঘরকে গণ্য করেন। ডাকঘরগুলোর নানা সমস্যা দূর করে যুগোপযোগী করার দাবী সবার।

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশক: ইলিয়াস উদ্দিন পলাশ

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ফেয়ার দিয়া ১১/৮/ই, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট (লেভেল-৮), বক্স কালভার্ট রোড, পান্থপথ, ঢাকা ১২০৫